বারাণসীর ১২৬ বছর বয়সী সন্ন্যাসী শিবানন্দ স্বামীকে সদ্য সম্মানিত করা হয়েছে পদ্মসম্মানে। শতায়ু এই বর্ষীয়ান পদ্ম সম্মান গ্রহণের অনুষ্ঠানে নিজের পায়ে হেঁটে প্রবেশ করেন। মাটিতে মাথা রেখে জানান প্রণাম। এমন এক ব্যক্তিত্বের প্রবল সতেজভাব ও ফিটনেস অনেককেই অবাক করেছে। প্রশ্ন ওঠে কী এমন বিশেষ ডায়েট-চার্ট বা রুটিন রয়েছে শিবানন্দ স্বামীর কাছে , যা তাঁকে এত বছর পর্যন্ত ফিট রেখেছে? একবার এই প্রশ্নের জবাবে কয়েক বছর আগে শিবানন্দ স্বামী বলেন, রোজ যোগভ্যাসই তাঁকে সুস্থ রেখেছে।
কোন রুটিনে রয়েছেন শিবানন্দ স্বামী?
শিবানন্দ স্বামী এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি সঙ্গম থেকে যেমন দূরে থেকেছেন আজীবন, তেমনই মশলাদার খাবার থেকেও ছিলেন দূরে। শুধুমাত্র এই আদর্শ ধরে রেখেই তিনি আজীবন নিজেকে ফিট রেখে গিয়েছেন। শিবানন্দ স্বামীর পাসপোর্ট বলছে, তিনি ১৮৯৬ ,সালের ৮ অগাস্ট জন্মেছেন তিনি। এই যুগপুরুষ তিনটি শতাব্দীকে নিজের চোখে দেখেছেন। আর তার মাঝে বিভিন্ন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ঝড়ঝাপ্টার মাঝে নিজেকে এভাবে ফিট রেখে কার্যত নজির গড়েছেন এই পদ্মসম্মান জয়ী।
কেমন খাদ্যাভ্যাস পছন্দ?
শিবানন্দ স্বামী বলছেন, তিনি ১২৬ বছর বয়সে এসেও সমান তালে রোজ ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটান যোগভ্যাসে। তিনি বলছেন, অত্যন্ত নিয়মানুবর্তিতা মেনে তিনি জীবনযাপন করতে পছন্দ করেন। তাঁর পাতে শুধুই সেদ্ধ খাবারদাবার পড়ে। ৫ ফুট ২ ইঞ্চি দীর্ঘ এই সন্ন্যাসী সেদ্ধ খাবারই পছন্দ করেন। তাঁর খাবারে থাকে বিভিন্ন সবজি, ভাত, ডাল ও লঙ্কা। থাকে না তেল বা মশলা। শুধু তাই নয়, দুধ বা ফল তিনি খান না। ছোটবেলায় এক দরিদ্র পরিবারে জন্মেছিলেন তিনি। বহুবার না খেয়ে রাতে ঘুমোনোর ঘটনাও মন করতে পারেন তিনি।
কেমন ছিল শিবানন্দ স্বামীর জীবন?
মাত্র ছয় বছর বয়সে নিজের মা বাবাকে হারিয়েছিলেন শিবানন্দ স্বামী। এরপর পরিবার তাঁকে এক আধ্যাত্মিক গুরুর হাতে তুলে দেয়। তারপর থেকেই ভক্তি মার্গে যাতায়াত করেছেন তিনি। তিনি বলছেন, অল্পে সন্তুষ্ট থাকাই সুখের রাস্তা। বর্তমান যুগে বহু কিছু প্রাপ্তির মাঝে অস্বস্তি, অসন্তুষ্টি বেড়ে গিয়েছে। ফলে সাধারণ জীবনযাপনেই মিশে থাকে কাঙ্খিত সুখ।