বর্তমান জীবনে কাজের ব্যস্ততা আর মানসিক চাপ দুই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। কখনও কখনও তো কাজের চাপে নাওয়া খাওয়ার সময় অবধি থাকে না। ফলে এটা বলাই যায় যে দিন দিন আমাদের জীবন যাপনের ধরন পাল্টে যাচ্ছে। রাতে দেরি করে ঘুমাতে যাচ্ছি আর উঠছি বেলা গড়িয়ে। কখনও আবার কাজের ঠেলায় সেটাও হচ্ছে না। কারও কারও জীবন থেকে তো ৮ ঘণ্টার নিশ্চিত ঘুম বিদায় নিয়েছে বহুদিন। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই ক্লান্তির কারণে রাতে বা কোনও দিন দুপুরে সময় পেলেই খাওয়া দাওয়ার পরেই অনেক ঘুমিয়ে পড়েন। দশ মিনিটের বিরতি দেন না। কিন্তু এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভালো নয়। এটা রীতিমত ক্ষতি করে।
একাধিক সমস্যা হতে পারে খাওয়ার পরেই ঘুমাতে গেলে। কী কী সমস্যা হতে পারে দেখুন, যদি আপনি খাওয়ার পর অন্তত মিনিট দশেকের বিরতি না দিয়েই ঘুমান।
১. হজমের সমস্যা: চিকিৎসকদের মতে রাতে খাওয়ার পরেই ঘুমাতে গেলে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। ঠিক করে খাবার হজম হতে চায় না। তাই আপনি যদি রোজ খাবার পরেই ঘুমিয়ে পড়েন তাহলে আপনার শরীরে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধতে পারে।
২. একাধিক রোগ: যেহেতু আপনি খাওয়ার পর সময় না দিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছেন সেহেতু আপনার হজম ঠিক করে হচ্ছে না। এর কারণে নানান রোগ হতে পারে। সবার আগে যেটা দেখা দেয় সেটা হল গ্যাসের সমস্যা, অম্বল এবং কোষ্ঠকাঠিন্য। ফলে থেকে থেকেই পেট ফাঁপ দেওয়া, বুক জ্বালা ভাব ইত্যাদি হতেই পারে।
তাহলে খাওয়ার পর কতক্ষন গ্যাপ দিয়ে ঘুমানো উচিত? আসুন এই প্রতিবেদন থেকে সেটা দেখে নেওয়া যাক। দেখুন খাবার খাওয়া এবং ঘুমের মধ্যে অন্তত পক্ষে তিন থেকে চার ঘণ্টার একটা গ্যাপ রাখতেই হবে। নইলে হজম ঠিক করে হবে না। ফলে আপনি রাতের খাবারের শেষ গ্রাস যখন খাচ্ছেন তার থেকে অন্তত তিন ঘণ্টা পর আপনার ঘুমানো উচিত।
কিন্তু অতক্ষণ আগে খেলে যদি ফের খিদে পেয়ে যায় তখন? সেটা হয় না। এটা কেবলই একটা ভুল ধারণা। আমাদের এমনটা কেবল মনে হয়। তবুও যদি আপনার মনে হয় যে এতক্ষণ আগে খেলে রাতে খিদে পেতে পারে তাহলে ঘুমানোর আধ ঘণ্টা আগে দুধ খেতে পারেন। এতে পেট ভরা থাকবে। অথবা কোনও কুকিজ খেতে পারেন। সেটাও পেট ভরে রাখবে।
তবে হ্যাঁ একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন রাতে বেশি ভারী খাবার, তেল, ঝাল খাবেন না। তার বদলে সহজ পাচ্য যে খাবার রয়েছে সেটা খাবেন। এবং চেষ্টা করবেন রাতে যাতে হাই ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া যায়, এতে পেটের সমস্যা দূর হয়। আর যদি আপনার বরাবর গ্যাস, অম্বলের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে রাতে ভুলেও দুধ বা দুধ জাতীয় জিনিস যেমন দই, ইত্যাদি খাবেন না। রাতে মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটাও পরিত্যাগ করুন।