বার্ড ফ্লু নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। যে অসুখটিকে এক সময়ে শুধু পাখির মধ্যেই সীমাবদ্ধ বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল, এখন সেটি নিজের রূপ বদলাচ্ছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আর তার ফলেই ক্রমশ বাড়ছে উদ্বেগ। এর আগে এমন কোনও বার্ড ফ্লু সংক্রমণের রেকর্ড নেই, যেখানে এক সঙ্গে এত পাখি আক্রান্ত হয়েছিল। আর সেই কারণেই ভয় আরও বেড়েছে।
সেই ভয়ই আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাWHO-র সাম্প্রতিক ঘোষণা। বলা হয়েছে, বার্ড ফ্লুর জন্য দায়ী যেH5N1ভাইরাস, সেটি নিজের গড়ন বদলাচ্ছে। অর্থাৎ মিউটেশন হচ্ছে এই ভাইরাসের। এবার এটি মানুষকেও সংক্রমিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আর তাতেই এটি নিয়ে উদ্বেগের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: শুধু পাখি নয়, বার্ড ফ্লু হতে পারে মানুষেরও, ভাইরাসের বদল দেখে সাবধান করল WHO
এই অসুখটি সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা রইল এখানে:
১। ১৯৯০ সাল থেকে এই অসুখটি সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তার পর থেকেই এটির উপর নজরদারি চলছে।
২। বর্তমানে যে বার্ড ফ্লু ভাইরাসের যে রূপটি মারাত্মক আকার নিয়েছে, সেটি হলavian influenza A (H5N1) 2.3.4.4b।
৩। ২০২০ সাল থেকে পরিযায়ী পাখির মারফত এই রোগটি ছড়াচ্ছে। এমনটাই বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট।
৪। বার্ড ফ্লু ভাইরাসের বর্তমান রূপটি উত্তর আমেরিকায় ২০২১ সাল থেকে পাওয়া গিয়েছে। তার পর থেকেই সেই মহাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে এর সংক্রমণ।
৫। আমেরিকার সরকারি হিসাব বলছে, ইতিমধ্যেই বার্ড ফ্লুর এই রূপটি সংক্রমিত হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৮০ লক্ষ মুরগি। তার মধ্যে শেষ সপ্তাহেই সংক্রমিত হয়েছে ৬ হাজারের উপর।
৬। আমেরিকার পক্ষিবীদ এবং চিকিৎসকরা বলেছেন, লক্ষণ দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এবার এক জাতের পাখি থেকে অন্য জাতের পাখির মধ্যে এই ভাইরাস খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে।
৭। এখানেই শেষ নয়। ইতিমধ্যেই স্তন্যপায়ীদের মধ্যেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। শিয়াল, বাঁদর, ভাল্লুক, সিংহের মধ্যেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ডলফিনের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে বলে আশঙ্কা।
৮। ইতিমধ্যেই ভোঁদর জাতীয় প্রাণীদের মধ্যে এই সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিয়েছিল। প্রচুর ভোঁদরকে হত্যাও করা হয়েছে এই কারণে। সংখ্যাটি প্রায় ৫১ হাজার।
বিজ্ঞানীদের অনুমান,এই ভাইরাস নিজের গড়ন দ্রুত বদলাচ্ছে। অর্থাৎ এটির মিউটেশন হচ্ছে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে এ বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে। বলা হয়েছে,যেভাবে এই ভাইরাসের গতিপ্রকৃতি বদলাচ্ছে,তাতে আগামী দিনে এটি খুব সহজেই মানুষের শরীরেও এসে পড়তে পারে। তার জন্য আগে থেকে প্রস্তুত থাকা দরকার। সচেতনতাও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।