মঙ্গলবার যুদ্ধের ষষ্ঠ দিন। রাশিয়া-ইউক্রেন লড়াইয়ে ক্ষয়ক্ষতি নেহাৎ কম নয়। এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সহজে পিছনোর কোনও ইঙ্গিত দেননি। দুই দেশ নিরপেক্ষ জায়গায় আলোচনায় বসলেও কোনও মীমাংসা সূত্রের খবর নেই। কূটনৈতিক স্তরে রাশিয়াকে একঘরে করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। এরই মধ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগদান করার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। আজ অনলাইনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে জাতীয়তাবাদ ও আবেগের মিশেলে বক্তব্য রাখলেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। বিশেষ বিধান অনুসারে ইউক্রেনকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কি এই ভয়ংকর হতে চলা যুদ্ধের কোনও পরিসমাপ্তি আনতে পারবে?
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যে কাজ ইউক্রেনের জন্য করতে পরে, তার মধ্যে প্রথমেই হল সেই দেশে অস্ত্রসস্ত্র পাঠানো। দ্বিতীয়ত, যে যে মিডিয়া রাশিয়া দ্বারা চালিত সেগুলো ব্যান করা। রাশিয়ান যুদ্ধ বিমানদের ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আকাশ ব্যবহার করতে না দেওয়া। এই প্রথম ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যুদ্ধে আক্রান্ত কোনও দেশকে সামরিক সাহায্য করছে। এছাড়াও ইউক্রেন থেকে আগত কোনও শরণার্থীকে তিন থেকে চার বছর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কোনও সদস্য দেশে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে এবং এর জন্য আইনত আশ্রয়ের অনুমতির প্রয়োজন নেই। বলাই বাহুল্য, এর মধ্যেই ইউক্রেনের নিকটবর্তী পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়াতে অনেক ইউক্রেনবাসী প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছেন।
তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে সদস্যপদ পাওয়া আর নেটোর সদস্যপদ পাওয়া এক নয়। নেটোর ক্ষেত্রে কোনও পরিস্থিতিতে প্রয়োজন পড়লে সদস্য দেশের সহযোগিতায় সামরিক সেনা প্রেরণের যে সুবিধা রয়েছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সেই নীতি নেই।
দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের লড়াই কোনও সময়েই কাম্য নয় বরং অবিশ্বাস্য ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন অনেক মানুষ, প্রচুর মানুষের প্রাণহানী হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়। এই অবস্থায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যদি বাস্তবের জমিতে দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে পারে কূটনৈতিক মারপ্যাঁচ নিয়ে, তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়। যদি সামরিক দিক থেকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যুক্ত হতে থাকে এবং সরাসরি এই সংঘর্ষের জড়িয়ে যায়, তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।