একেই করোনাভাইরাসের প্রকোপে ধুঁকছে ভারত। তারইমধ্যে নতুন করে আতঙ্ক বাড়িয়েছে ছত্রাক সংক্রমণ বা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’। যার পোশাকি নাম মিউকোরমাইকোসিস। ইতিমধ্যে দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে একাধিক করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে সেই সংক্রমণের হদিশ মিলেছে।
সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গুজরাতে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীদের শরীরে থাবা বসাচ্ছে সেই ছত্রাক। তার ফলে কয়েকজনের দৃষ্টিভঙ্গি নষ্ট হয়েছে। সুরাতের একটি হাসপাতালের চেয়ারম্যানে মাথুর সাবানি পিটিআইকে জানিয়েছেন, হাসপাতালে মিউকোরমাইকোসিসের শিকার ৫০ জনের চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসার অপেক্ষায় আছেন আরও ৬০ জন। ইতিমধ্যে সাতজনের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু কী এই ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বা মিউকোরমাইকোসিস, তা দেখে নিন একনজরে। সঙ্গে উপসর্গ এবং প্রতিরোধের উপায়ও জেনে নিন।
‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বা মিউকোরমাইকোসিস কী?
অত্যন্ত গুরুতর এবং বিরল ছত্রাক সংক্রমণ। যা করোনাভাইরাসের কারণে আরও মারাত্মক হয়েছে। সেই সংক্রমণের ফলে একাধিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। মৃত্যু পর্যন্ত হয়। গত বছর যে অ্যাডভাইজারি জারি করা হয়েছিল, সেই অনুযায়ী সার্বিকভাবে মিউকোরমাইকোসিসের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশের মতো।
সেই সংক্রমণের ফলে সাইনাস বা ফুসফুসে বেশি প্রভাব পড়ে (শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীর প্রবেশ করলে)। আবার শরীরের কোনও কাটা, পুড়ে যাওয়া জায়গা বা ত্বকে অন্যান্য কোনও আঘাত দিয়ে ছত্রাক প্রবেশ করলে ত্বকে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। অ্যাডভাইজারি অনুযায়ী, শরীরের যে কোনও জায়গায় সেই সংক্রমণ হতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের এমনিতেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তার ফলে ছত্রাক সংক্রমণে শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তবে স্বস্তির বিষয় যে মানুষ থেকে মানুষের দেহে সেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে না। একইসঙ্গে মানুষ এবং প্রাণীর মধ্যে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ ছড়ায় না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
উপসর্গ
অসাড় মুখ, নাকের একদিক বন্ধ, চোখে ফোলা বা ব্যথা। কাশি, জ্বর, মাথা যন্ত্রণার মতো উপসর্গও দেখা দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে ত্বকের যেখানে আঘাত আছে, সেখানে সংক্রমণ হতে পারে। তারপর তা দ্রুত শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে যেতে পারে। গায়ে ফোসকা, ত্বকে লালভাব-ফোলাভাবের মতো উপসর্গ নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিরোধের উপায়
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অসাড় মুখ, নাকের একদিক বন্ধ, চোখে ফোলা বা ব্যথার মতো উপসর্গগুলি দেখা দিলেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো যত দ্রুত সম্ভব অ্যান্টি-ফাঙ্গাস থেরাপি শুরু করে ফেলতে হবে। এড়িয়ে যেতে হবে ধুলোর সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ। মাটি বা শ্যাওলা নিযে ঘাঁটাঘাটির সময় জুতো, লম্বা প্যান্ট পরতে হবে। সাবান এবং জল দিয়ে ত্বকের আঘাত পরিষ্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।