শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমসিংহে ফের একবার জরুরি অবস্থার ঘোষণা করলেন দেশে। সাধারণ জনগণের স্বার্থেই এই জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা করা হয় বলে জানানো হয়েছে গ্যাজেটে। এদিকে এই সপ্তাহেই দেশের আগামী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করবে শ্রীলঙ্কার সংসদ। এই প্রক্রিয়ার ফের আম জনতার অসন্তোষ যাতে হিংসায় পরিণত না হয়, তাই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। ওয়াকিবহল মহলের একাংশের মত, রনিল বিক্রমসিংহে নিজেই রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য লড়তে পারেন। তবে রনিলের বিরুদ্ধে জনরোষ ক্রমেই বাড়ছে শ্রীলঙ্কায়। এই আবহে তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগেভাগেই জরুরি অবস্থা জারি করলেন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি। এদিকে নির্দেশিকায় লেখা, ‘জননিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সম্প্রদায়ের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও পরিষেবার রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে এটি (জরুরি অবস্থা জারি) করা সমীচীন।’
এর আগে গত ১৩ জুলাই শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। পরে সিঙ্গাপুরে পৌঁছে তিনি নিজের পদত্যাগ পত্র পাঠান সংসদের স্পিকারকে। এই আবহে শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা আগামী রাষ্ট্রপতি বেছে নেবেন। বর্তমানে মেয়াদ পূর্ণ করবেন এই রাষ্ট্রপতি। এই মেয়াদপূর্তির পর ফের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে শ্রীলঙ্কায়। এদিকে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব সামলাবেন। প্রসঙ্গত, মহিন্দা রাজাপক্ষেপ পদত্যাগের পর গোতাবায়া রনিলকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসিয়েছিলেন। যদিও তাঁর দলের বর্তমান সাংসদ সংখ্যা ১। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে শ্রীলঙ্কাবাসীর মধ্যে। তাঁদের বক্তব্য, রনিল অযোগ্য প্রধানমন্ত্রী। এই আবহে রনিল পদত্যাগ করবেন বলেও পদত্যাগ করেননি। এখন তিনি দেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি। যা ভালো চোখে দেখছেন না বিক্ষোভকারীরা। প্রতিবাদীরা রনিলের পদত্যাগের দাবি করছেন এখন। তবে মনে করা হচ্ছে, রনিল রাষ্ট্রপতি হওয়ার লড়াইয়ে নামতে পারেন নিজে।
এর আগে গোতাবায়া দেশ ছাড়ার পর দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন রনিল। কার্ফু জারি করা হয়েছিল কলোম্বোতে। তবে তাতে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ কার যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর অফিস, রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলের স্টেশন দখল করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে সেনাকে বলপ্রয়োগের অনুমতি দিয়েছিলেন রনিল। যদিও সামরিক বাহিনী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করেনি। ধীরে ধীরে প্রতিবাদীরা সরকারি বিল্ডিংগুলো খালিও করে দেন। তবে রাষ্ট্রপতি বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়ার আগে ফের অশান্তির আশঙ্কা থেকে ফের একবার জরুরি অবস্থা জারি করলেন রনিল।