বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারতে 'সংখ্যালঘুদের ওপর হিংসার' ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে দেশের বিরোধী দলগুলি। কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশও এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এমনকী সম্প্রতি মোদীর মার্কিন সফরকালে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও ভারতের সংখ্যালঘুদের 'নিরাপত্তা' নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এই আবহে এবার ভারতের সংখ্যালঘুদের নিয়ে মুখ খুললেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। প্রাক্তন এই গুপ্তচর এককালে মুসলিম সেজে নিজে পাকিস্তানে থাকতেন। আর সেই অজিত ডোভালের কথায়, ইসলামের বিশেষ স্থান রয়েছে ভারতে।
অজিত ডোভাল বলেন, 'ভারতে বহু শতাব্দী ধরে সম্প্রীতির সহাবস্থানে রয়েছে বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ধর্মের মানুষ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ইসলাম এই দেশের ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি অনন্য এবং গর্বের স্থান দখল করে আছে।' উল্লেখ্য, মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মহম্মদ বিন আবদুল করিম আল-ইসা ভারত সফরে এসেছেন। নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়া ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন মহম্মদ বিন আবদুল করিম আল-ইসা। সেই অনুষ্ঠানেই বক্তৃতা রাখেন ডোভাল। সেই সময় ভারতে ইসলাম ধর্মের বিশেষ অবস্থান নিয়ে বলেন তিনি।
এদিকে নিজের ভাষণে আল-ইসাকে মধ্যপন্থী ইসলামের উল্লেখযোগ্য বৈশ্বিক কণ্ঠস্বর হিসেবে আখ্যা দেন ডোভাল। পাশাপাশি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ইসলামের বিষয়ে গভীর জ্ঞান এবং উপলব্ধি রয়েছে আল-ইসাকের। পাশাপাশি ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যকার মধুর সম্পর্কেরও উল্লেখ করেন ডোভাল। তিনি বলেন, 'ভবিষ্যতের দিকে একই দৃষ্টিভঙ্গিতে তাকান আমাদের দুই রাষ্ট্রনেতা। এই বিষয়ে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করেন।' এদিকে ভারতের বিষয়ে ডোভাল বলেন, 'ভারত একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্র। আমাদের দেশে সব নাগরিক তাদের ধর্মীয়, জাতিগত এবং সাংস্কৃতিক পরিচয় নির্বিশেষে নিরাপদে বসবাস করেন। সেই নিরাপত্তা প্রদান করতে সফল ভাবে সক্ষম হয়েছে ভারত।' অজিত ডোভাল বলেন, 'অর্গনাইজেন অফ ইসলামিক কোঅপারেশনের ৩৩টি সদস্য দেশের সম্মিলিত মুসলিম জনসংখ্যার প্রায় সমসংখ্যক মুসলিম ভারতে বসবাস করে।'
উল্লেখ্য, এর আগে হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিজেপির বহিষ্কৃত মুখপাত্র নুপূর শর্মা বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। সেই সময় মধ্যপ্রচ্যের বেশ কিছু দেশ দিল্লির কাছে 'নালিশ' ঠুকেছিল। তবে তখন এস জয়শংকর এবং অজিত ডোভাল মিলেই তাদের 'উদ্বেগ' মিটিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, বিজেপি কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী দল হিসেবে পরিচিত হলেও বিগত ৯ বছরে মোদীর নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশের সঙ্গেই ভারতের সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বহু দেশের থেকে সর্বোচ্চ সম্মান পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।