সম্প্রতি আমেরিকা এবং কানাডার আকাশে বেশ কয়েকটি উড়ন্ত বস্তু উড়তে দেখা গিয়েছে। সেগুলি মার্কিন বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান মিসাইল ছুড়ে মাটিতে নামায়। এর কয়েকদিন আগেই চিনা 'গুপ্তচর বেলুন'ও তাদের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ায় গুলি মেরে নামিয়েছিল আমেরিকা। এই আবহে পরবর্তী ঘটনাগুলি নিয়ে ক্রমেই জল্পনা বেড়েছে। এই আবহে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জঁ-পিয়ের সোমবার স্থানীয় সময়ে বলেন, উত্তর আমেরিকার আকাশসীমায় কয়েকটি অজানা বস্তুকে গুলি করা হয়েছে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে এলিয়েন বা বহির্জাগতিক কোনও কিছুর ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, এর আগে আমেরিকার আকাশে উড়তে থাকা একটি চিনা বেলুনকে মিসাইল ছুড়ে সমুদ্রে নামিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। সেই বেলুন নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছিল এক রিপোর্টে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, ভারত ও জাপান-সহ বেশ কয়েকটি দেশকে নিশানা করেছে চিনের এই 'গুপ্তচর' বেলুন। এই আবহে ৪০টি 'বন্ধুরাষ্ট্র'কে সতর্ক করেছিল আমেরিকা। প্রথম থেকেই অভিযোগ ছিল, হোয়াইট হাউজের গোপন তথ্য জানতে হানা দিচ্ছে চিনের গুপ্তচর বেলুন। আমেরিকার পর পর লাতিন আমেরিকার আকাশেও দেখা গিয়েছিল সেই বেলুনটি। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা এবং চিনের সম্পর্ক আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিনকেন তাঁর চিন সফর বাতিল করেছেন। এরই মাঝে পরপর দুই দিন আলাস্কা এবং কানাডার ওপর দিয়ে অজ্ঞাত বস্তু উড়তে দেখা গিয়েছিল। মার্কিন এফ-২২ যুদ্ধবিমান সেই বস্তুগুলিকে ধ্বংস করে। পরে আরও একবার এই একই ঘটনা ঘটে। তবে সেই তিন ঘটনার সঙ্গে কোনও দেশের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি মার্কিন প্রশাসনের তরফে। এরপরই জল্পনা শুরু হয়। তবে কি এলিয়েনের ইউএফও উদ্দেশ্য করে গুলি করে মার্কিন বিমান? এই নিয়েই এবার মুখ খুলল হোয়াইট হাউজ।
এদিকে চিন দাবি করেছিল, আমেরিকার নর্থ ক্যারোলাইনার আকাশে যে বেলুনটি ছিল, সেটা তাদেরই। তবে আলাস্কা ও কানাডার আকাশের অজ্ঞাত বস্তু নিয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি চিনের তরফে। আমেরিকার তরফেও কোনও দেশকে অভিযু্ক্ত করা হয়নি এই নিয়ে। এদিকে প্রথম ঘটনার প্রেক্ষিতে চিনের তরফে দাবি করা হয়েছিল, উড়তে উড়তে হাওয়ায় কোনওভাবে আমেরিকার আকাশে ঢুকে পড়েছিল তাদের বেলুন। এর সঙ্গে গুপ্তচরবৃত্তির কোনও যোগ নেই বলেও দাবি কার হয়েছে। পাশাপাশি বেলুনটিকে গুলি করে ভূপতিত করার বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছে বেজিং। চিন জানায়, আবহাওয়া সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক কারণে বেলুনটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এরপরেই ভারত-সহ অন্যান্য মিত্র দেশগুলিকে সতর্ক করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে, চিনা গুপ্তচর বেলুনের নিশানায় ছিল আরও বেশকিছু দেশ। মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারি অফ স্টেট ওয়েন্ডি শেরম্যান আমেরিকায় নিযুক্ত ৪০টি দেশের রাষ্ট্রদূতকে চিনা বেলুন সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন।