ছোটখাটো অপরাধ করলে এবার থেকে আর জেলে যেতে হবে না অপরাধীকে। যদিও অপরাধ করার মাশুল ঠিকই গুনতে হবে তাকে। সেই ক্ষেত্রে জরিমানা করা হবে সেই অপরাধীকে। এই ধরনেরই একটি বিল আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। 'জনবিশ্বাস' নামক এই বিলের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার মোট ৪২টি আইন সংশোধন করতে চাইছে বলে জানা গিয়েছে। এই বিলেই বলা হয়েছে, ছোটখাটো অপরাধের ক্ষেত্রে আর কারাদণ্ড নয়, বরং হবে অর্থদণ্ড। দেশে যে পরিমাণ মামলা জমে রয়েছে, তার চাপ সামলানো যাবে এই নয়া বিল কার্যকর হলে।
উল্লেখ্য, গতবছরও এই জনবিশ্বাস বিল পেশ করা হয়েছিল সংসদে। পরে সেই বিলটি পাঠানো হয়েছিল যৌথ সংসদীয় কমিটিতে। বিল নিয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য, দেশের মানুষের ওপর ভরসা রেখে ছোটখাটো অপরাধের জন্য কারাদণ্ডের বিধান তুলে দিতে চাইছে সরকার। তবে অপরাধী যাতে ফের সেই অপরাধ না করে, এই আবহে শাস্তির জন্য রাখা হচ্ছে জরিমানার বিধান। যদিও সংসদীয় কমিটির বহু সদস্য এই জনবিশ্বাস বিলের বিরোধিতা করেছিলেন। এই কমিটিতে রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ও। তিনিও এই বিলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এই আবহে ফের সংশোধন করা হয়েছে জনবিশ্বাস বিল। এবং সম্প্রতি তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। এই আবহে আসন্ন বাদল অধিবেশনে সেই বিলটি নতুন করে পেশ করা হতে পারে সংসদে।
তবে এই নিয়ে বিরোধীদের আপত্তি রয়েছে। তাদের বক্তব্য, কারাদণ্ডের বিধান তুলে দিলে অপরাধীদের মধ্যে কোনও ভয়ডর থাকবে না। এদিকে সরকার বলছে যৌথ সংসদীয় কমিটির মতামত গ্রহণ করেই জনবিশ্বাস বিল সংশোধন করা হয়েছে। সেই সংশোধিত বিলটি পেশ করা হবে সংসদে। এর আগে গতবছর ডিসেম্বরে বিলটি সংসদে পেশ করার সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়াল বলেছিলেন, 'যারা ছোটখাটো ভুল করেছে তাদের আদালতে পাঠানো উচিত নয়। তাদের জরিমানা করা উচিত। কিন্তু তাদের আইনি মারপ্যাঁচে ফেলা উচিত নয়। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের আস্থা এবং ব্যবসায়ীদের আস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবং এই বিলটি আদালতের বোঝাও কমিয়ে দেবে।' তবে বিরোধীদের পালটা যুক্তি, এই বিল কার্যকর হলে আদালত ও বিচার ব্যবস্থার কী হবে? অপরাধীর দোষ প্রমাণিত হবে কোথায়? তাহলে তো বিচারবহির্ভূত ভাবে যে কাউকে দোষী প্রমাণিত করা যাবে এবং জরিমানা করা যাবে।