বালি মাফিয়াদের ট্রাক্টর রুখতে গিয়ে ভয়ঙ্কর পরিণতি হল পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টরের। তাকে ট্রাক্টরের চাকায় পিষে দিল বালি মাফিয়ারা। ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের শাহাদোলের বেওহারি থানার খাদৌলি গ্রামের কাছে । নিহত এএসাইয়ের নাম মহেন্দ্র বাগরি (৩৭)। তিনি ওই থানায় পোস্টিং ছিলেন। সেখানে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে গিয়ে দুই সহকর্মীকে নিয়ে ট্রাক্টর থামানোর চেষ্টা করেন মহেন্দ্র। সেই সময় তাকে ট্রাক্টরের চাকায় পিষে দেয় বালি মাফিয়ারা।
আরও পড়ুনঃ অবৈধভাবে বালি তোলায় তৈরি গর্তে পড়ে মৃত ৩ শিশু! শোকের ছায়া করণদিঘিতে
জানা গিয়েছে, ওই এএসআই একেবারে ট্রাক্টরের সামনে দাঁড়িয়ে চালককে থামার সংকেত দেন। কিন্তু, চালক গাড়িটি না থামিয়ে তার উপর দিয়ে চালিয়ে দেয়। এরপর চালক রাজ রাওয়াত ট্রাক্টর থেকে ঝাঁপ দেয়। যার ফলে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি সেতু থেকে নীচে পড়ে যায়। পরে পুলিশ রাজ এবং গাড়ির মালিকের ছেলে আশুতোষ সিংকে গ্রেফতার করেছে। দুজনেই জামোদি গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গিয়েছে, সুরেন্দ্র সিং ২০২৩ সালের অগস্টে অবৈধ বালি পাচারের জন্য গ্রেফতার হয়েছিল। তবে সে জেল থেকে পালিয়ে যায়। তাকে গ্রেফতার করতে তথ্যের জন্য ৩০,০০০ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (খুন) এবং খনি আইনের অধীনে একটি মামলা নথিভুক্ত করেছে। পুলিশ সুপার কুমার প্রতীক এবং শাহদোল জোনের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডিসি সাগর এই ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, ময়নাতদন্তের সময় মহেন্দ্র বাগরির দেহ অসম্মানজনকভাবে ফেলে রাখার অভিযোগ ওঠে। তাঁর দেহটি মেঝেতে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই বিষয়টির আলাদাভাবে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন এসডিএম নরেন্দ্র সিং ধুরভে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল শাহদোল জেলায়। সে ক্ষেত্রে বালি মাফিয়াদের হাতে খুন হয়েছিলেন রাজস্ব বিভাগের একজন আধিকারিক। আর এবার খুন হলেন একজন এএসআই।
উল্লেখ্য, জলের পর বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় ব্যবহৃত সম্পদের তালিকায় রয়েছে বালি। ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে অবৈধভাবে বালি খনন করার অভিযোগ শোনা যায়। ‘ডাউন টু আর্থে’র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সারাদেশে অবৈধ খনির বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে পুলিশ কর্মীসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের ৩৯ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।