ব্রাজিলিয়ান কংগ্রেস এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল সেদেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রকের অফিস, সুপ্রিম কোর্টেও হামলা চালাতে দেখা গিয়েছ বলসোনারো সমর্থকদের। এর আগে কয়েক বছর আগে ঠিক একই ভাবে মার্কিন কংগ্রেসে হামলা চালিয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। ঠিক সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটল ব্রাজিলে। ব্রাজিলিয়ান সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সহ বিশ্বের বহু নেতা। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। পাশাপাশি ব্রাজিলের প্রতিবেশী চিলি, কলম্বিয়া এবং ভেনিজুয়েলাও ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে, গত ১ জানুয়ারি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভাগ গ্রহণ করেছিলেন লুলা দা সিলভা। তবে রীতি মেনে তাঁর হাতে প্রেসিডেনশিয়াল স্যাশ তুলে দেননি বলসোনারো। বরং লুলা শপথ নেওয়ার আগেই দেশ ছেড়েছিলেন বলসোনারো। আমেরিকার ফ্লোরিডা প্রদেশে পাড়ি দেন তিনি। সেখানে অবস্থিত ডিজনিল্যান্ডের খুব কাছেই একটি বাড়ি ভাড়া করে সেখানে থাকছেন বলসোনারো। এর আগে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন বলসোনারো। তবে তাঁর কাছে প্রমাণ ছিল না। এদিকে ব্রাজিলিয়ান কংগ্রেস ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলার দায় বলসোনারোর ঘাড়েই চাঁপিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লুলা। তবে লুলার সেই অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বলসোনারো। পাশাপাশি তিনি এই ঘটনার নিন্দাও জানিয়েছেন। তবে তিনি এও দাবি করেছেন, তাঁর সমর্থকদের 'শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে'র অধিকার রয়েছে। এদিকে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্ব ফেডারেল বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন লুলা দা সিলভা।
এর আগে গত অক্টোবরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জিতে তৃতীয়বারের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হন লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। এই নির্বাচনে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো পান ৪৯.১ শতাংশ ভোট। এদিকে জয়ী লুলা পান ৫০.৯ শতাংশ ভোট। ব্রাজিলে এই প্রথম কোনও প্রার্থী প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন নির্বাচনে হেরে যান। প্রসঙ্গত, নির্বাচনের বহু আগে থেকেই ব্রাজিলের ইলেক্ট্রনিক ভোটিং সিস্টেমের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বলসোনারো। এই আবহে বিগত কয়েক দশকের রীতি ভেঙে প্রেসিডেনশিয়াল স্যাশ নয়া প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দেননি বলসোনারো। তাঁর বিরুদ্ধে এখন নানা অভিযোগের তদন্ত শুরু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই আবহে বলসোনারো কবে দেশে ফেরেন, তা নিয়ে কৌতূহল অনেকের। এই সবের মাঝেই এবার বলসোনারোর সমর্থকদের এই হামলা।