মাছ চাষে বাংলাদেশে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃতি পেয়েছে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য। মাছ চাষের ফলে তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থান। একই সঙ্গে সমৃদ্ধ হয়েছে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, দেশের নাগরিকদের খাদ্য এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়েছে পাশাপাশি রফতানি এবং বাণিজ্য প্রসারে নজর কাড়া অবদান রেখেছে বাংলাদেশের মাছ চাষ। বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রাণিজ প্রোটিনের যে চাহিদা রয়েছে তার ৬০ শতাংশের জোগান দিচ্ছে মাছ।
২০১৬-১৭ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের জন্য মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। গোটা বিশ্বে মোট যত পরিমাণের মিষ্টি জলের মাছ চাষ হচ্ছে তার ১১ শতাংশ হয় বাংলাদেশেই। বর্তমানে বাংলাদেশ চাষের মাছ উৎপাদনে ভিয়েতনাম এবং মিশরের সঙ্গে সেরা তিনে স্থান করে নিয়েছে।
মাছের এই পরিমাণ উৎপাদন এবং বিক্রি আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশকে দারুন খ্যাতি এনে দিয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের খাদ্য এবং কৃষি সংস্থার একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে বিশ্বের মধ্যে অভ্যন্তরীণ খোলা জলাশয়ে মাছ চাষের নিরিখে বাংলাদেশ তৃতীয় স্থানে রয়েছে, বদ্ধ স্থানে মাছ চাষের নিরিখে রয়েছে পঞ্চম স্থানে। অন্যদিকে ইলিশ উৎপাদনে প্রথম এবং তেলাপিয়া মাছ উৎপাদন চতুর্থ স্থানে রয়েছে ওপার বাংলা। দ্যা স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার ২০২২ রিপোর্টে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এশিয়ার মধ্যে স্থান পেয়েছে ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশ, অন্যদিকে আফ্রিকা থেকে রয়েছে মিশর। বাংলাদেশের জিডিপির ৩.৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২৬.৫০ শতাংশ আসে মাছের চাষ, উৎপাদন ইত্যাদি থেকে।
অন্যদিকে ইলিশ উৎপাদন এবং বিক্রিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জাতীয় মাছ হচ্ছে ইলিশ। বাংলাদেশে যত পরিমাণ মাছ উৎপাদন করা হয় তার ১২.২২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে। বাংলাদেশের জিডিপিতে ইলিশের অবদান অনেক। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ইলিশ জিআই তকমা পেয়েছে।