টিকিট না পেয়ে ভোটের মুখে বিজেপি ছেড়েছেন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেটার। ছ'বরারের বিধায়কের দলত্যাগ নিয়ে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই অকপটে বললেন, 'এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। বিজেপির ওপর এর প্রভাব পড়বে।' তবে তিনি আরও বলেন, 'দল এই ধাক্কা সামলে উঠবে এবং আগামী নির্বাচনে জিতে ফের সরকার গঠন করবে।' উল্লেখ্য, এর আগে জগদীশ নিজে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে তিনি বিজেপির তরফ থেকে টিকিট না পেলেও ভোটে লড়বেন। তাতে প্রায় ২০টি আসনে দলের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। সেই সুরই শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের গলায়। তিনি মেনে নেন যে হুবলি-ধারওয়াড় অঞ্চলে বিজেপির ভোট শতাংশে প্রভাব পড়বে। (আরও পড়ুন: 'ডিএ ইস্যুতে হাই কোর্টের কথা শুনছে না সরকার', বিস্ফোরক দাবি আন্দোলনকারীদের)
উল্লেখ্য, গতকাল জগদীশ দলত্যাগের ঘোষণা করার আগে মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী এবং ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেন জগদীশ শেটার। শনিবার রাতে এই তিনজন জগদীশের বাসভবনে যান। তবে সেই বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ার পরই দল ছাড়ার ঘোষণা করেন জগদীশ। পাশাপাশি এও জানিয়ে দেন তিনি এই নির্বাচনে লড়বেন। তবে তিনি অন্য কোনও দলে যোগ দেবেন, নাকি নির্দল হয়ে লড়বেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে মাত্র একদিন আগে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মণ সাভাদি দল থেকে পদত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দেন। এই আবহে জগদীশের দলত্যাগ বিজেপির কাছে আরও বড় ধাক্কা।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন জগদীশ শেটার। এর আগে ২০১২ সালে একবছরের জন্য কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও কর্ণাটক বিধানসভার স্পিকার পদ সামলেছেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বেও ছিলেন জগদীশ। এহেন হেভিওয়েট লিঙ্গায়াত নেতাকে এবার টিকিট দেয়নি বিজেপি। উল্লেখ্য, বিএস ইয়েদুরাপ্পাও লিঙ্গায়াত সম্প্রদায়ের। কর্ণাটকের সবথেকে বড় সম্প্রদায় এটি। এই সম্প্রদায় বিগত কয়েক দশক ধরে বিজেপিকেই সমর্থন করে এসেছে। এদিকে জগদীশ জানিয়েছেন যে তিনি বিজেপি এবং বিধায়কপদ ছাড়লেও নির্বাচনে লড়বেন।
এদিকে দলত্যাগ প্রসঙ্গে জগদীশ বলেন, 'ভারাক্রান্ত মন নিয়ে দল থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমিই এই দলকে গড়ে তুলেছি। কিন্তু তারা (দলের কিছু নেতা) আমাকে দল থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। তারা এখনও জগদীশ শেটারকে চেনেনি। তাই এভাবে আমাকে অপমান করল। তারা যেভাবে আমাকে উপেক্ষা করেছে তাতে আমি বিরক্ত। এটা আমাকে ভাবতে বাধ্য করেছে যে আমার চুপ করে বসে থাকা উচিত নয় এবং আমাকে তাদের চ্যালেঞ্জ করতেই হবে। সেই বিবেচনা থেকেই আমি এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা বলেছি।' লিঙ্গায়ত নেতা আরও অভিযোগ করেছেন যে তাঁর বিরুদ্ধে একটি নিয়মতান্ত্রিক ষড়যন্ত্র চলছিল দলে। জগদীশ যোগ করেছেন, তিনি কখনই একজন অস্থির ব্যক্তি ছিলেন না তবে দল তাঁকে এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য করেছে।