খাতায়-কলমে বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে বর্ষা-পরবর্তী মরশুম। কিন্তু আগামী চার-পাঁচদিনে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিরও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। উত্তর-মধ্য বঙ্গোপসাগর, উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ ওড়িশা উপকূলের নিম্নচাপের জেরেই মূলত সেই বর্ষণ হতে পারে।
তারইমধ্যে মৌসম ভবন জানিয়েছে, ৬১ বছর পর দেশে পরপর দু'বছর স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার বর্ষায় কম সংখ্যক আবহাওয়া অফিসে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টি পরিলক্ষিত হলেও সার্বিকভাবে ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের তুলনায় দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে। যা অত্যন্ত স্যাঁতস্যাতে আবহওয়ার প্রবণতা বজায় রেখেছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার বর্ষায় ১০৮.৭ শতাংশ (দীর্ঘকালীন সময়ের গড়ের ভিত্তিতে) বৃষ্টি হয়েছে। যা ১৯৯০ সালের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ। ১৯৯৪ ও ২০১৯ সালে সেই গড় ছিল যথাক্রমে ১১২ ও ১১০ শতাংশ। বর্ষাকালের বিশ্লেষণ করে মৌসম ভবন জানিয়েছে, ১৯৫৮ এবং ১৯৫৯ সালের পর এই প্রথম দেশে পরপর দু'বছর স্বাভাবিকের থেকে বেশি বর্ষণ হয়েছে।
মৌসম ভবনের তরফে বলা হয়েছে, ‘ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে মাসিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বিবেচনা করে বলা যায়, ঐতিহাসিক পরিসংখ্যানের নিরিখে এই মরশুম আলাদাভাবে চিহ্নিত থাকবে। জুন, জুলাই, অগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে দেশে দীর্ঘকালীন সময়ের গড়ের যথাক্রমে ১১৮, ৯০, ১২৭ এবং ১০৪ শতাংশ বৃষ্টি হয়েছে।’
তবে দেশের সর্বত্র একইভাবে বৃষ্টি হয়নি। কয়েকটি অঞ্চলে বৃষ্টির যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, তার থেকেও বেশি বর্ষণ হয়েছে। কয়েকটি প্রান্তে আবার উলটো প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে যেমন স্বাভাবিকের ৯৬ শতাংশ বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেখানে স্বাভাবিকের থেকে সাত শতাংশ বেশি বর্ষণ হয়েছে। বিশেষত অগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশে স্বাভাবিকের থেকে চার শতাংশ বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রত্যাশা ছাপিয়ে ১১৮ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়েছে।
তবে সেই তারতম্যে খুব একটা অবাক নন জাতীয় আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের প্রধান কে স্বাতী দেবী। তিনি জানান, বিভিন্ন অঞ্চলের চার মাসের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে প্রায়শই তারতম্য হয়। তা সঠিক হয় না। যত সময় বেশি হয়, তত পূর্বাভাসের বিষয়টি শক্ত হয়ে ওঠে।