পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওড়িশা, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বিগত বছরগুলিতে বেশ ভালো ফল করে এসেছে বিজেপি। গতবছর গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনেও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বড় জয়লাভ করেছিল বিজেপি। দেশের আদিবাসীদের নিজেদের দিকে টানতে রাষ্ট্রপতি পদেও একজন আদিসাবীকে বসায় গেরুয়া শিবির। তবে কর্ণাটকের আদিবাসীরা ২০২৩ সালে খালি হাতে ফেরাল বিজেপিকে। কর্ণাটকে তফসিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত একটি আসনেও বিজেপি এবার জিততে পারেনি। যা গেরুয়া শিবিরের জন্য এর বড় চিন্তার কারণ হতে পারে। কারণ এবছরই আবার ছত্তিশগড়ে নির্বাচন রয়েছে। সেখানে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে আদিবাসী ভোটারদের প্রভাব অনেকটাই।
এদিকে শুধুমাত্র আদিবাসী নয়, তফসিলি জাতির ভোটাররাও বিজেপির দিকে ফিরে তাকায়নি এবারের কর্ণাটক নির্বাচনে। তফসিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত মোট ৩৬টি আসনের মধ্য এবার কর্ণাটকে বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে মাত্র ১২টি। এদিকে কংগ্রেস জিতেছে ২১টি আসনে। তাছড়া জেডিএস জয়ী ৩টি মাত্র আসনে। এদিকে এই ৩৬টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে দ্বিতীয় স্থানে আসে বিজেপি। অর্থাৎ, ১১টি আসনে হারের ব্যবধান অনেকটাই বেশি। এদিকে তফসিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত ১৫টি আসমনের একটিতেও জিততে পারেনি গেরুয়া শিবির। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে মোট ৫১টি সংরক্ষিত আসনের ২২টিতে জিতেছিল বিজেপি। তবে এবার তাদের ঝুলিতে সব মিলিয়ে এসেছে মাত্র ১২টি আসন।
প্রসঙ্গত, কর্ণাটকে এবারে ভোটে ভোক্কালিগা ভোট কংগ্রেসের খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছে কর্ণাটকে। কর্ণাটকের মোট জনসংখ্যার মধ্যে লিঙ্গায়েত সম্প্রদায় ১৭ শতাংশ। তারপরই রয়েছে ভোক্কালিগা। তারা ১১ শতাংশ। মূলত দক্ষিণ কর্ণাটকে মাইসোর অঞ্চলে ভোক্কালিগাদের বাস। ঐতিহাসিক ভাবে ১৯৯৯ সাল থেকে ভোক্কালিগারা জেডিএস-কেই ভোট দিয়ে আসছে। তবে ২০১৮ সালে দক্ষিণ কর্ণাটক বা মাইসোর অঞ্চলে বেশ ভালো ফল করেছিল বিজেপি। সেবারে ভোক্কালিগা অধ্যুষিত এলাকায় ডবল ফিগারে আসন লাভ করেছিল বিজেপি। তবে এবার সেই আসন সংখ্যা নেমে এসেছে ৬-এ। তবে সেই অর্থে এই অঞ্চলে ভোট শতাংশ কমেনি বিজেপির। তবে এই অঞ্চলে জেডিএস-এর একটা বড় অংশের ভোট গিয়েছে কংগ্রেসের দিকে। এর জন্যই এই অঞ্চলে ৩৭টি আসনে জিতেছে কংগ্রেস। এই অঞ্চলে আগেরবার যেখানে জেডিএস জিতেছিল ২৬টি আসন, তারা এবার এই অঞ্চলে পেয়েছে মাত্র ১৪টি আসন।
এদিকে দক্ষিণের মতো মধ্য কর্ণাটকেও এগিয়ে কংগ্রেস। এই অঞ্চলে ৭টি আসনে বিজেপি জয়ী। ২৪টি আসনে জয়ী কংগ্রেস। হায়দরাবাদ-কর্ণাটকেও অনেকটাই এগিয়ে কংগ্রেস। এই অঞ্চলে কংগ্রেস জিতেছে ২০টি আসনে। ৬টি আসনে জয়ী বিজেপি। এই অঞ্চলে জেডিএস ৩টি আসনে জয়ী। এদিকে কর্ণাটকে সার্বিক ভাবে পিছিয়ে পড়লেও বেঙ্গালুরু এলাকায় কংগ্রেসকে টক্কর দিয়েছে বিজেপি। এই অঞ্চলের ১৫টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। কংগ্রেস এগিয়ে ১৭টি আসনে। এছাড়া উপকূলীয় কর্ণাটকে অবশ্য এগিয়ে বিজেপি। এই অঞ্চলে ১৪টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। ৬টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। এই অঞ্চল থেকেই সূচনা হয়েছিল হিজাব বিতর্কের। অপরদিকে উত্তর কর্ণাটকে বিজেপি অনেকটাই জমি হারিয়েছে। এই অঞ্চলে ৩১টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। বিজেপি জিতেছে মাত্র ১৬টি আসনে।