পশ্চিমবঙ্গে ‘শিকার’ চলছে বিজেপি থেকে। ভিন রাজ্যে কংগ্রেস থেকে চলছে ‘শিকার’। যে তালিকায় সাম্প্রতিকতম নির্দশন হল মেঘালয়ের ১২ জন কংগ্রেস বিধায়কের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান। সেই পরিস্থিতিতে আসন সংখ্যার নিরিখে কি কংগ্রেসকে ছাপিয়ে যেতে পারবে তৃণমূল? গাণিতিক বিশ্লেষণে সেই সম্ভাবনা পুরোপুরি আছে।
এমনিতে ভোটের ফলাফলের বিষয়ে আগেভাগেই পূর্বাভাস দেওয়া যথেষ্ট বিপজ্জনক। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। তাও গাণিতিক মডেলের ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের থেকে বেশি আসন পেতে পারে তৃণমূল। এমনিতে লোকসভা নির্বাচনের তৃণমূলের সেরা ফল হয়েছিল ২০১৪ সালে। পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি আসনের মধ্যে ৩৪ টিতেই ফুটেছিল জোড়াফুল। সেইসময় তৃণমূলের পক্ষে ভোট পড়েছিল ৩৯.৮ শতাংশ। এবার বিধানসভা নির্বাচনে ৪৮.৫ শতাংশ ভোট গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে। সেই পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় নিজেদের সেরা ফল করতে চাইবে তৃণমূল। অর্থাৎ ৩৪ টির বেশি আসন জয়ের লক্ষ্য নেওয়া হবে। বিশেষত বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির যে শক্তি ছিল, তা অনেকটাই কমে গিয়েছে। সেটাও তৃণমূলের পক্ষে যেতে হবে। যদিও এটা ঠিক যে বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটের আঙ্গিক পুরোপুরি আলাদা হয়।
অন্যদিকে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৫২ টি আসনে জিতেছিল কংগ্রেস। তার মধ্যে কেরালা (১৫), পঞ্জাব (আট) এবং তামিলনাড়ু (আট) থেকেই এসেছিল ৩১ টি আসন। কিন্তু চলতি বছর কেরালার বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের যে ভরাডুবি হয়েছে, তাতে ২০২৪ সালে আদৌও কতগুলি আসনে হাত শিবির জিতবে, তা নিয়ে ধন্দ আছে। তামিলনাড়ুতে কংগ্রেসের ভাগ্য পুরোপুরি ডিএমকের সঙ্গে আসন বণ্টনের উপর নির্ভর করবে। আগেরবার লোকসভা ভোটের সময় তামিলনাডু়তে ক্ষমতায় ছিলেন না এম কে স্টালিনরা। এবার আছেন ক্ষমতায়। ফলে কংগ্রেসের ভাগ্যে কতগুলি আসন জুটবে, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন আছে। অন্যদিকে, পঞ্জাবে তো গোষ্ঠীকোন্দলেই জর্জরিত কংগ্রেস। খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নিজের দলের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই অনশনে বসার হুমকি দিচ্ছেন। তাছাড়া অসমেও কংগ্রেসের অবস্থা শোচনীয়। হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে ধস নেমে গিয়েছে। সেইসঙ্গে অসমে কংগ্রেসের ঘরে সিঁধ কেটেছে তৃণমূল।
সেই পরিস্থিতিতে তৃণমূল যদি পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অন্য রাজ্য থেকে লোকসভা ভোটে কোনও আসন পেতে পারে, সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের উপর আরও চাপ বাড়বে। যদিও এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ভিন রাজ্য থেকে তৃণমূলের সেই সম্ভাবনা তেমন দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। বরং তাঁদের বক্তব্য, কংগ্রেসকে ছাপিয়ে যেতে গেলে হাত শিবিরের আসন কমতে হবে। তবেই সম্ভাবনা আছে তৃণমূলের।