একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা আদায় নিয়ে নয়াদিল্লিতে যে আন্দোলন গড়ে তুলল তৃণমূল কংগ্রেস এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পুলিশ যে আচরণ করল সেটা এখন গোটা দেশের কাছে আলোচ্য বিষয়। কারণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং দেখা করেননি। তাঁর প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি ডেকে পাঠিয়েও দেখা করেননি। উলটে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে চলল পুলিশের বলপ্রয়োগ এবং অত্যাচার। অথচ কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল দেখা করবেন বলে তিনি অপেক্ষা করছিলেন। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অপেক্ষার পরও কেউ দেখা করতে আসেননি।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর কথার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই দাবিকে মিথ্যা বলেছেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি অভিযোগ করেন, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি। এই নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যে কলকাতা নেমে দোলা সেন আজ বলেন, ‘ওরা সাংঘাতিক অত্যাচার করেছে। মহিলা সাংসদদের গায়ে হাতে দিয়েছে দিল্লির পুরুষ পুলিশ। আমরা ইমেল করে সমস্ত তথ্য দেওয়ার পর ওদের সম্মতিতেই গিয়েছিলাম কৃষি ভবন। তারপর ছলচাতুরি করে দেখা করেননি প্রতিমন্ত্রী। জবাব মানুষ দেবেন।’
এদিকে এসবের মধ্যে আজ, বুধবার মন্তব্য করে বসেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। এদিন তিনি বলেন, ‘দিল্লিতে এসে কৃষি মন্ত্রকে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দফতরে অপেক্ষা করানো হয়েছে। কোনও সাংসদ বা মন্ত্রী দেখা করেননি। ৫০০ লোক নিয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা রাজে অরাজকতা চলছে। পশ্চিমবঙ্গকে ২ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। শুধু এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পতেই ৫৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ দুর্নীতির আখড়া হয়েছে। এই লুঠ লুকোতেই অরাজকতা করছে।’
আরও পড়ুন: অভিষেকের রাজভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে অনুপস্থিত রাজ্যপাল, মুখোমুখি হবেন কি?
অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যন্তরমন্তরে অন্য একটি দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, ‘২০২১ সাল থেকে কোনও টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের প্রকল্পে। ২০২১ থেকে ২০২৩ একশো দিনের কাজের টাকা দিয়েছে দেখাতে পারবে কোনও বিজেপি নেতা–মন্ত্রী। দেখাতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’ আর আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং অন্য তথ্য দিচ্ছেন। সম্ভবত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যে টাকা দেওয়ার দাবি করছেন সেটা ২০২১ সালের আগের তথ্য। তখন অবশ্য কেন্দ্রীয সরকারই বাংলার সরকারকে শংসাপত্র দিয়ে জানিয়েছিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নে দারুণ কাজ করেছে পশ্চিমবঙ্গ। সুতরাং গোটা বিষয়টির মধ্যে একটা ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।