খুনের চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণে সব সময় শারীরিক আঘাতই জরুরি নয়, ঐতিহাসিক রায়ে জানাল বম্বে হাই কোর্ট। বিচারপতি ভারতী ডাংরে জানিয়েছেন, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় অভিযুক্তের কাজ ও সেই সূত্রে কোনও ফলাফলের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন করা হয়েছে।’
শুক্রবার বিচারপতি আরও জানান, ‘এই ধরনের কোনও কাজ আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে সব সময় ফলদায়ী না-ও হতে পারে, কিন্তু তার জন্য অভিযুক্তকে এই ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা যায়।’
২০১৫ সালে জনৈক ভিকাজি গুরবকে হত্যার চেষ্টায় অভিযুক্ত শচীন গুরব ও সমীর গুরবের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় বম্বে হাই কোর্ট। বিজয়দুর্গ পুলিশের অভিযোগ ছিল, শচীন ও সমীরের বাবাকে হত্যার অভিযোগে ভিকাজির বিরুদ্ধে আদালতে বিচার হয়। কিন্তু সেই মামলায় বেকসুর ছাড়া পাওয়ার পরে ভিকাজির বিরুদ্ধে ক্ষোভ ফেটে পড়ে দুই ভাইয়ের। তারই জেরে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর সিন্ধু দুর্গা জেলার পেনঢারি গ্রামে ফেরার পরে তাঁর উপর প্রতিহিংসা নেওয়ার পরিকল্পনা করে তারা।
অভিযোগ, অন্য কারও হাতের ছড়ি ছিনিয়ে নিয়ে ভিকাজির মাথায় আঘাত করে দুই ভাইয়ের একজন। এর পর তাঁকে মাটিতে ফেলে বাঁ হাত চেপে ধরে সমীর এবং পাথরের আঘাতে সেই হাত থেঁৎলে দেন শচীন। প্রবল রক্তক্ষরণের জেরে পরে ওই হাতটি ভিকাজির দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়।
ঘটনার প্রেক্ষিতে দুই ভাইয়ের আইনজীবী আদালতকে জানায়, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে ভিকাজির একটি হাত বাদ দিতে হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তদের তাঁকে হত্যা করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। শরীরের কোনও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গহানির জন্য তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়নি। তাই অভিযুক্তদের কাজ যে হত্যার চেষ্টা, তা বলা সঙ্গত হবে না।
বিচারপতি তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের কাজ যা-ই হোক, তাদের কাজের উদ্দেশ্য ও ধরণ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখা দরকার, বিশেষ অঙ্গে মারাত্মক আঘাত হানার ফলে আক্রান্তের মাথাতেও আংশিক ফ্র্যাকচার হয়েছিল যা মৃত্যুর কারণ হতে পারত। একই সঙ্গে বাঁ হাতের ক্ষতে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করা না হলে, তার জেরেও আক্রান্তের জীবনে বড়সড় ক্ষতিসাধন করতে পারত। বিচারপতির মতে, ‘অভিযুক্তরা যে সুনির্দিষ্ট চিন্তা করেই এ কাজে প্রবৃত্ত হয়েছিলেন, তা খুবই স্পষ্ট।’