মাফিয়া থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া আতিক আহমেদের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা দেশে। এই নিয়ে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা রাজকুমার সিং রাজ্জু আতিকের কবরে জাতীয় পতাকা রেখে বিতর্কে জড়িয়েছেন। ইতিমধ্যেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাক্তন সমাজবাদী পার্টি সাংসদরে 'শহিদ' আখ্যা দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা। এদিকে রাজকুমারকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, আসন্ন পুরভোটে কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করার কথা ছিল রাজকুমারের। তবে আতিক বিতর্কে নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যতে জল ঢেলেছেন তিনি।
এদিকে প্রয়াগরাজ কংগ্রেসের প্রধান প্রদীপ মিশ্র অংশুমান জানান, কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে দক্ষিণ মালাকার আজাদ নগর থেকে প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল রাজকুমারের। তবে তাঁকে ছয় বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে যাতে দেখা গিয়েছে, রাজকুমার আতিক আহমেদের কবরে জাতীয় পতাকা রাখছে। রাজকুমার আতিক ও তাঁর ভাই আশরাফের পক্ষে স্লোগানও তুলছে। আতিককে 'শহিদ' আখ্যা দিয়ে তাঁকে ভারত রত্নে ভূষিত করার দাবি তুলেছেন রাজকুমার। তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'তিনি একজন জনপ্রতিনিধি ছিলেন এবং তিনি শহিদ হয়েছেন। কেন তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হল না এবং কেন তাঁর সমাধিতে তেরঙ্গা লাগানো হল না?'
এদিকে এই ঘটনার পরই পুলিশ রাজকুমারকের গ্রেফতার করেন। এরপরই আরও একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী কেসব প্রসাদ মৌর্যর থেকে একটি পুরস্কার গ্রহণ করছেন রাজকুমার। সেই ছবির প্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতা অংশুমান দাবি করেন, এই গোটা বিষয়টাই কংগ্রেসকে কালিমালিপ্ত করার একটা ষড়যন্ত্র। এদিকে আরও দাবি করা হয়, রাজকুমারের মানসিক ভারসাম্য নেই। তাঁর চিকিৎসা চলছিল এবং তাঁর বাড়ি থেকে ওষুধ পাওয়া গিয়েছে বলেও জানান অংশুমান। এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে ধুমনগঞ্জ থানায় রাজেশ কুমার মৌর্য জানিয়েছেন যে রাজকুমারকে আটক করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আতিকের ছেলে আসাদ আহমেদের মৃত্যু হয়েছিল এক এনকাউন্টারে। ছেলের শেষযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আতিক আবেদন জানালেও তাঁকে ছাড়া হয়নি। এই আবহে ছেলের শেষকৃত্যের দিন রাত ১০টা নাগাদ আতিককে প্রয়াগরাজের এক সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য। সেখানেই গাড়ি থেকে নামার পর আতিককে ঘিরে ধরেছিলেন সাংবাদিকরা। তাঁর ছেলের শেষযাত্রা না যেতে পারা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছিল আতিককে। প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও কয়েক পা যাওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে শুরু করেছিলেন আতিক। কিছু কথা বলার পরই আচমকা আতিকের বাঁদিক থেকে এক বন্দুকধারী এসে মাথায় 'পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে' গুলি করে তাঁকে। ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আতিকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পাঁচ পুলিশকর্মীকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।