কংগ্রেস সহ মোট ১৯টি বিরোধী দল নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়েছে। আর এরই মধ্যে দলকে অস্বস্তিতে ফেলে বেসুরো কংগ্রেস নেতা আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম। সংসদ ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠান বয়কট প্রসঙ্গে এই কংগ্রেস নেতা বলেছেন, 'নতুন সংসদ ভবন নিয়ে বিতর্ক কেন? ভারতের সংসদ বিজেপির সম্পত্তি নয়। বুঝতে হবে দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের সংসদ উদ্বোধন না করলে কে করবে? ভারতের প্রধানমন্ত্রী যদি ভারতের সংসদ উদ্বোধন না করেন তাহলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী করবেন?' আচার্য প্রমোদের কথায়, 'মোদীর বিরোধিতা করার অধিকার আমাদের আছে। কিন্তু দেশের বিরোধিতা করার অধিকার আমাদের নেই। আমি বিরোধীদের কাছে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করছি।'
আগামী ২৮ মে, রবিবার উদ্বোধন হতে চলেছে দেশের নতুন সংসদভবন। তবে সেই উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, আম আদমি পার্টি সহ ১৯টি বিরোধী দল। গতকাল এই আবহে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে দলগুলি। ১৯ দলের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, 'যখন সংসদ থেকে গণতন্ত্রের আত্মাকে শুষে নেওয়া হয়েছে, তখন এই নতুন বিল্ডিংয়ের কোনও দাম নেই আমাদের কাছে।' বিরোধীদের অভিযোগ, রাষ্ট্রপতিকে নয়া সংসদভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বিরোধী দলগুলির দাবি ছিল, প্রধানমন্ত্রী মোদীর বদলে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সংসদ ভবন উদ্বোধন করা উচিত।
কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস, দ্রাবিড় মুন্নেত্র কাজগম (ডিএমকে), বামদলগুলি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডিইউ), জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি), সমাজবাদী পার্টি, উদ্ধব ঠাকরের শিব সেনা যৌথভাবে এই বিবৃতিতে স্বাক্ষ করেছে। বিরোধীদের দাবি, সংবিধানের ৭৯ নং ধারা অনুযায়ী রাজ্যসভা এবং লোকসভা নিয়ে গঠিত ভারতের সংসদের প্রধান রাষ্ট্রপতি। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র লোকসভার নেতা। তাই রাষ্ট্রপতির বদলে প্রধানমন্ত্রী সংসদভবনের উদ্বোধন করায় সংবিধানকে অসম্মান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এই আবহে গতপরশু অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে নবান্নে দেখা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তৃণমূল সংসদ ভবন উদ্বোধন বয়কট করবে। এরপর আজ সবকটি বিরোধী দল একযোগে সংসদ উদ্বোধন বয়কটের ডাক দিল।
প্রসঙ্গত, এর আগে লোকসভার সচিবালয় থেকে সংসদ ভবন উদ্বোধন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অনুরোধ পাঠানো হয়। এরপরই রাহুল গান্ধী দাবি তোলেন, প্রধানমন্ত্রী নয়, বরং রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে সংসদ ভবনের উদ্বোধন করানো উচিত। তারপর অন্যান্য বিরোধী নেতারাও এই একই দাবি তোলেন। এর আগে সংসদ ভবনের ওপরে থাকা অশোকস্তম্ভ নিয়েও জোর বিতর্ক হয়েছিল। সেই স্তম্ভের সিংহগুলি 'হিংস্র' বলে অভিযোগ করা হয়। এই নিয়ে মামলা করা হয় আদালতে। তবে আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, সংসদভবনের মাথায় বসানো অশোক স্তম্ভের সিংহ বেআইনি নয়। এই সিংহের আত্মপ্রকাশ হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরেই।