সম্প্রতি যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি বিভি শ্রীনিবাসের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তোলেন অসমের যুব কংগ্রেসের সভাপতি অঙ্কিতা দত্ত। অসমের প্রাক্তন মন্ত্রী অঞ্জন দত্তের মেয়ে অঙ্কিতাকে এরপর দল থেকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় এবার তদন্তে নেমেছে অসম পুলিশ। রাহুল ঘনিষ্ঠ শ্রীনিবাসের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে কর্ণাটকে পৌঁছে গিয়েছে অসম পুলিশের দল। এই আবহে এবার কংগ্রেস রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বিস্ফোরক দাবি করলেন হিমন্তের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস নেতার দাবি, হিমন্ত অমিত শাহের জায়গা নিতে চাইছেন। তাই এইসব কাজ করছেন। যদিও অসমের মুখ্যমন্ত্রী এর পালটা দিয়েছেন। (আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহের বিদায়, নেমেছে বৃষ্টি, সোমবার থেকে খুলছে স্কুল-কলেজগুলি?)
এই বিষয়ে রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, 'অসমের দলবদলু মুখ্যমন্ত্রী অমিত শাহের পদকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি এখন খবরে থাকার জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছেন...আমরা এই মিথ্যা প্রচার (শ্রীনিবাসের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ) সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। কখনও তিনি (হিমন্ত বিশ্ব শর্মা) পবন খেরাকে গ্রেফতারর করতে চান, কখনও তিনি শ্রীনিবাসকে গ্রেফতার করতে চান। সারদা কেলেঙ্কারি এবং লুই বার্জার কেলেঙ্কারির জন্য মোদী একবার তাঁকে (হিমন্তকে) গ্রেফতার করার চেষ্টা করেছিলেন। সম্ভবত নিজের সম্মান রক্ষা করার জন্যই তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর প্রতি কোনও মনোযোগ দেওয়া উচিত না।' এদিকে সুরজেওয়ালার বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় হিমন্ত কংগ্রেসকে পালটা তোপ দেগেছেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ আইন অনুযায়ী কাজ করছে এবং কংগ্রেসে মহিলা কর্মীদের নিরাপদহীন পরিবেশের জন্য আমাকে দোষ দেওয়া উচিত না।’
আরও পড়ুন: কেন সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল ডিএ মামলা? জানা গেল আসল কারণ, পরবর্তী শুনানি কবে?
রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত যুব কংগ্রেস সভাপতি বিভি শ্রীনিবাসের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় করেছিলেন অসমের নেত্রী অঙ্কিতা দত্ত। এহেন অঙ্কিতাকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করে দল। এই গোটা ঘটনায় রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ওপর 'ভরসা রাখার' বার্তা দিয়েও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছিলেন অঙ্কিতা। তাঁর দাবি, হেনস্থার বিষয়ে বহু মাস আগে জানানো হলেও এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি শ্রীনিবাসের বিরুদ্ধে। এদিকে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে শ্রীনিবাস রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবেই পরিচিত। সেই ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়েই শ্রীনিবাস নিজের 'ক্ষমতা' প্রদর্শন করছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন অঙ্কিতা।
অঙ্কিতার অভিযোগ ছিল, শ্রীনিবাস অনবরত তাঁকে হেনস্থা করেছেন। লিঙ্গের ভিত্তিতে তাঁর সঙ্গে ভেদাভেদ করেছেন। এদিকে শ্রীনিবাস ঘনিষ্ঠ বর্ধন যাদবও তাঁর সঙ্গে অনবরত খারাপ ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ অঙ্কিতার। অসম যুব কংগ্রেসে লবিবাজি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। অঙ্কিতার আরও অভিযোগ, তিনি দলের সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে একাধিকবার এই হেনস্থার কথা জানিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি আরও জানান, ভারত জোড়ো যাত্রার সময় জম্মুতেও বিষয়টি রাহুলের কানে তুলেছিলেন অঙ্কিতা। এদিকে অঙ্কিতার এই অভিযোগের পরই যুব কংগ্রেসের অফিশিয়াল টুইট হ্যান্ডেল থেকে জানানো হয় যে অঙ্কিতার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। আর পরে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়।