করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে দেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে চাহিদা তৈরি করার পাশাপাশি ব্যাঙ্কের দেউলিয়া হওয়া ঠেকাতে মানুষের হাতে অর্থ দেওয়ার দাওয়াই দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আলোচনায় তিনি জানিয়েছেন, ‘ভারতের এখন দরকার চাঙ্গা করার প্যাকেজ। এখনও পর্যন্ত আমরা বড়সড় কোনও আর্থিক প্যাকেজ তৈরি করে উঠতে পারিনি। খরচের মাধ্যমেই অর্থনৈতিক মন্দা থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভ। এর ফলে অর্থনীতিতে এক প্রাণশক্তি সঞ্চার করা যায়।’
যে সমস্ত দেশবাসীর জীবনরক্ষার জন্য খাদ্যশস্য প্রয়োজন, তাঁদের ৩-৬ মাসের জন্য রেশন কার্ড বরাদ্দ করা দরকার বলে তিনি জানিয়েছেন। ওই কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমেই তাঁদের অর্থ, গম ও চাল জোগান দেওয়া যায় বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ।
এ ছাড়া তিনি সতর্ক করেছেন, ‘চাহিদা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। টাকার দাম ৬০% পড়লেও খুব ক্ষতি হবে না। কিন্তু শুধুমাত্র দরিদ্রদের প্রত্যক্ষ নগদ সাহায্য করার বিষয়টি তর্কসাপেক্ষ।’
উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল দেশের নিম্নগামী অর্থনীতির দাওয়াই খুঁজতে প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর রঘুরাম রাজনের সঙ্গেও কথা হয় রাহুলের। রাজন তাঁকে জানিয়েছেন, সরকারের উচিত দরিদ্রদের সরাসরি টাকা দেওয়া এবং রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে যত বেশি সম্ভব মানুষকে খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা। এই বাবদ সরকারের আনুমানিক খরচ দাঁড়াবে ৬৫,০০০ কোটি টাকা, দাবি রাজনের। তাঁর যুক্তি, প্রায় ২০০ লাখ কোটি টাকার মোট ঘরোয়া উৎপাদনের তুলনায় এই অর্থ এমন কিছুই বড় নয়।
অন্য দিকে অভিজিৎ বিনায়কের মতে, যে হেতু এখনও দরিদ্র নাগরিকদের এক বড় অংশ রেশন ব্যবস্থার আওতায় পড়েন না, তাই সরকার এই পদক্ষেপ করলে করোনা সংকটকালে তাঁদের দুর্দশা দূর হবে।
লকডাউন তুলে দেওয়ার পরিপন্থী অভিজিৎ বলেন, যখন প্রতিদিন এত বিশাল পরিমান মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, তখন লকডাউন তুলে দেওয়া অসম্ভব। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে সংক্রমণের গতিবিধি।
মোটের উপর, লকডাউনের পরে ভারতের ভেঙে পড়া অর্থনীতি ফের চাঙ্গা হওয়ার বিষয়ে আশার আলোই দেখছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।