ভারতের প্রথম করোনাভাইরাসের ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেন্ট’ কোভ্যাক্সিন (Covaxin) কমপক্ষে ৬০ শতাংশ কার্যকরী হবে। এমনটাই জানাল প্রস্ততকারক সংস্থা ভারত বায়োটেক।
কোভ্যাক্সিনের তৃতীয পর্যায়ের ট্রায়াল শুরুর জন্য বৃহস্পতিবার রাতের দিকে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) অনুমোদন পেয়েছে সেই সংস্থা। সেই পর্যায়ে সম্ভাব্য টিকার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখা হবে। আর আগামী বছর এপ্রিল বা মে'তে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হরে পারে।
বিষয়টি নিয়ে ভারত বায়োটেকের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর সাই প্রসাদ ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে বলেছেন, ‘(প্রাথমিকভাবে) আমাদের কোভিড টিকার কার্যকারিতার মানদণ্ড ৬০ শতাংশ ধরা হয়েছে। কোভ্যাক্সিনের সবথেকে বড় তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চালাব আমরা। আগামী বছর এপ্রিল বা মে'র গোড়ার দিকে সেই কার্যকারিতা সংক্রান্ত ফলাফল মিলবে।’
করোনা টিকা সংক্রান্ত যাবতীয় খবর দেখুন এখানে
শ্বাসতন্ত্র টিকার মান, সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা সংক্রান্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) নির্দেশিকা অনুযায়ী, অনুমোদনের জন্য কোনও টিকাকে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ কার্যকারী হতে হবে। ভারত বায়োটেকের প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট দলের সদস্য প্রসাদ বলেন, ‘৫০ শতাংশ কার্যকরী হলেই শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত টিকার অনুমোদন দেয় হু, মার্কিন এফডিএ (ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) এবং ভারতের সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গাইজেশন। কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে আমরা কমপক্ষে ৬০ শতাংশ কার্যকারিতার লক্ষ্যমাত্রা পার করার চেষ্টা করছি। তবে তারও বেশি হতে পারে। আমাদের ট্রায়ালের ফল অনুযায়ী, টিকার কার্যকারিতা ৫০ শতাংশের কম হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। যে ফলাফলে প্রাণীদের উপর পরীক্ষার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের রিপোর্ট কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দিয়েছে ভারত বায়োটেক। তাতে গুরুতর সুরক্ষাজনিত উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি। দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ইতিমধ্যে সুরক্ষাজনিত পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়ে হিয়েছে। আপাতত অনাক্রম্যতা পরীক্ষা চলছে। সেই ক্ষেত্রে টিকা প্রয়োগের পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখা হয়। একইসঙ্গে চলছে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের প্রস্তুতি।
টিকার কার্যকারিতা নির্ধারণ করতে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হবে। দেশের ১৩-১৪ টি রাজ্যের ২৫-৩০ টি জায়গায় ২৬,০০০ ‘বিষয়’ নিয়ে সেই ট্রায়াল চলবে। প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটা ছিল ২,০০০-এর মতো। দ্বিতীয় পর্যায়ে তা ছিল ৪০০। প্রসাদ বলেন, ‘তৃতীয় পর্যায়ের জন্য আমরা ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। নভেম্বরে (স্বেচ্ছাসেবকদের) নেওয়া হবে এবং ডোজ শুরু করে। তাতে টিকা ও প্লাসেবো গ্রহীতাদের দুটি ডোজ দেওয়া হবে। সংক্রমণের হার, স্থানীয়ভাবে কীভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর ভিত্তি নিয়োগ ও জায়গা বেছে নেওয়ার বিষয়টি নির্ভর করবে। হাসপাতালপিছু ২,০০০-এর মতো বিষয় নথিভুক্ত হতে পারে।’