লাল কেল্লা সহ দিল্লির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মৃত্যু হয়েছে এক কৃষকের, আহত হয়েছেন ৮৩জন পুলিশের। লাল কেল্লার ভিতর চড়াও হয়ে পতাকা উত্তোলন করে চাষীরা। আর তারপর থেকেই চলছে দায় ঝেড়ে ফেলার প্রক্রিয়া। লালকেল্লায় এই কাজের নেপথ্যে যে পঞ্জাবি অভিনেতা তথা সমাজকর্মী আছেন, সেই দীপ সিধু বিজেপির লোক বলে দাবি করেছেন কৃষি নেতারা।
ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ তিকাইত বলেন যে দীপ সিধু শিখ নয়, ও বিজেপির কর্মী। মোদীর সঙ্গে সিধুর ছবি আছে। এটা চাষীদের আন্দোলন, সেটাই থাকবে। যারা অশান্তি করেছে তারা আন্দোলনের অংশ কখনো ছিল না। কিছু লোককে এই স্থান ছেড়ে চলে যেতে হবে।
তিকাইত বলেন যে এটা শিখদের আন্দোলন নয়, এটি কৃষকদের আন্দোলন।। দুই মাস ধরে একটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। কিষান মজদুর সংঘর্ষ কমিটির নেতা এসএস পান্ধের বলেন যে কিছু সমাজবিরোধী যুক্ত হয়ে গিয়েছিল কৃষক আন্দোলনের নাম খারাপ করতে। তারা লাল কেল্লায় যাননি বলে জানান তিনি। দীপ সিধুর ওপর তাদের সন্দেহ আছে কারণ মোদীর সঙ্গে তাঁর ছবি আছে বলে কৃষক সংগঠন নেতা জানান।
প্রসঙ্গত, সানি দিওলের নির্বাচনের সময় তাঁকে সাহায্য করেন দীপ সিধু। তবে পরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে বলে জানা গিয়েছে। সানি দেওল টুইটারে মঙ্গলবার বলেন যে আগেই জানিয়েছি দীপ সিধুর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই তাঁর ও তাঁর পরিবারের। মোদীর সঙ্গে যখন সানি দেওল দেখা করতে যান, তখন তাঁর সঙ্গে ছিল দীপ সিধু। সেই ছবির কথাই বলছে কৃষকরা।
এর আগেও গুরুদাসপুরের সাংসদ নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন যে এখন সিধুর সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই। মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভ করেন দীপ সিধু, যেখানে তিনি বলেন যে তাঁরা জাতীয় পতাকাকে অপমান করেননি, প্রতীকী প্রতিবাদের জন্যই লাল কেল্লায় নিশান সাহিব উত্তোলন করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, প্রথমে পঞ্জাব-হরিয়ানার শম্ভু সীমান্তে প্রতিবাদ করেন দীপ সিধু। তারপর বিগত কিছুদিন ধরে দিল্লির সিন্ধু সীমান্তে হাজির থেকেছেন এই অভিনেতা। পঞ্জাবের মুক্তাসর জেলায় আদি বাড়ি দীপ সিধুর। তাঁর প্রতিবাদ সভায় অনেক সময় খলিস্তানপন্থীরা জায়গা পেয়েছে, এই অভিযোগ বারবার উঠেছে।
নিজের ভিডিওতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে দীপ সিধু বলেন যে যখন মানুষের অভাব অভিযোগের সুরাহা হয়না, তখন আক্রোশ বাঁধ ভাঙতে বাধ্য। এর জন্য কেউ ব্যক্তিগত ভাবে দায়ী নয় বলে তিনি জানান। দীপ সিধুর সঙ্গে একদা গ্যাংস্টার এখন সমাজকর্মী লাখা সিধানার ঘনিষ্ঠতার কথা উঠে আসছে। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা গিয়েছে যে লাখা সিধানা আপত্তি করেছে চাষীদের জন্য পুলিশ যে পথ নির্ধারিত করেছে সেটা নিয়ে।
নিজের ভাষণে বারবার জার্নেল সিং ভিন্দ্রানওয়ালের কথা উল্লেখ করেছেন সিধু। খলিস্তানি যোগের অভিযাগে গত মাসে তাঁকে সমনও জারি করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।