অগ্নিপথ মামলায় বড় রায় দিল্লি হাই কোর্টের। উচ্চ আদালত আজ রায় দিয়ে অগ্নিপথ প্রকল্পের বৈধতা বহাল রেখেছে। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর জন্য কেন্দ্রের নিয়োগ প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ করে যে সমস্ত পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল, সেগুলিকে খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। এদিকে সামরিক বাহিনীগুলিতে আগের নিয়মে নিয়োগ প্রকল্প চালু করার দাবি জানিয়ে করা আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে দিল্লি উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মা এবং বিচারপতি সুব্রমনিয়াম প্রসাদের একটি বেঞ্চ। আদালত বলে, 'এই আদালত সামরিক বাহিনীর নিয়োগ প্রকল্পে হস্তক্ষেপ করার কোনও কারণ খুঁজে পাইনি।'
উল্লেখ্য, গতবছরই চালু হয় ভারতীয় সামরিক বাহিনীর অগ্নিপথ নিয়োগ প্রক্রিয়া। তবে এই স্কিমের ঘোষণা হতেই দেশ জুড়ে এর বিরোধিতায় আগুন জ্বলতে শুরু করেছিল। এই স্কিমের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয় দিল্লি হাই কোর্টে। এর আগে অগ্নিপথ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার আদালতকে বলেছিল, ‘এই পদ্ধতিটি মেধা ভিত্তিক, স্বচ্ছ। এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি বেশ শক্তিশালী। যাঁরা রেগুলার ক্যাডার হতে ইচ্ছুক, সেই কর্মীদেরও ন্যায্য সুযোগ প্রদান করা হবে এই প্রক্রিয়ায়। এতে জাতীয়তাবাদী, সুশৃঙ্খল এবং দক্ষ জনশক্তি প্রদান করা যাবে সমাজকে।’ সরকারের দাবি, নতুন সামরিক প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সশস্ত্র বাহিনীকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাহিনীর সামগ্রিক গঠনতন্ত্র এবং কাঠামো বদল প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। সরকারের কথায়, শারীরিক এবং মানসিকভাবে নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে সক্ষম তরুণরা। আজ রায়দানের মাধ্যমে কার্য সরাকরের এই যুক্তি মেনে নেন বিচারপতিরা।
এর আগেও অবশ্য মামলার শুনানি চলাকালীন পর্যবেক্ষণে বিচারপতিরা বলেছিলেন যে এই নিয়োগ প্রকল্পের মূল্যায়ণের যোগ্যতা তাঁদের নেই। দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মা এবং বিচারপতি সুব্রমনিয়াম প্রসাদের একটি বেঞ্চ বলেছিল, ‘সরকার বলছে যে আমরা একটি তরুণ সেনা চায় এবং তাই বিশেষজ্ঞরা এই পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। আমরা (বিচারপতি) বিশেষজ্ঞ নই... আমরা কীভাবে সিদ্ধান্ত নেব যে কোনটা ভালো? চার বছর না সাত বছর? এটি আমাদের বিষয় নয়।’ আদালতের তরফে আৎও বলা হয়েছিল, ‘এই স্কিমে কী ভুল রয়েছে? এটা বাধ্যতামূলক নয়। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, আমরা সামরিক বিশেষজ্ঞ নই। আপনি (আবেদনকারী) এবং আমি বিশেষজ্ঞ নই। সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমানবাহিনীর বিশেষজ্ঞদের ব্যাপক প্রচেষ্টার পর এই নীতিটি প্রণয়ন করা হয়েছে... সরকার একটি বিশেষ নীতি প্রণয়ন করেছে। এটি বাধ্যতামূলক নয়, এটি স্বেচ্ছায় গ্রহণ করা যায়।’ আজকের রায়দানেও আদালতের আগের এই পর্যবেক্ষণের প্রতিফলন দেখা গেল।