সংসদের বাদল অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য রাজ্যসভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও 'ব্রায়েনকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব পেশ হল আজ। আজ মণিপুর ইস্যুতে আলোচনা চেয়ে ডেরেক ও'ব্রায়েন সংসদে 'হট্টগোল' শুরু করলে তাঁকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব পেশ করেন রাজ্যসভার নেতা পীযূষ গোয়াল। পরে সেই প্রস্তাব পেয়ে ডেরেককে উচ্চ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। সেই সময় ধনখড়কে রীতিমতো উত্তেজিত দেখায়। তিনি চেয়ার ছেঁড়ে উঠে তর্জনী উঁচিয়ে ডেরেকের নাম উল্লেখ করেন সভায়।
উল্লেখ্য, আজকে অধিবেশনের শুরু থেকেই রাজ্যসভায় হট্টগোল শুরু হয়। বিরোধীদের তরফে কংগ্রেস সাংসদ রাজীব শুক্লা অভিযোগ করেন, ভারতকে ডিজিটাল করার প্রচেষ্টা চলছে আর গতকাল সংসদে ভোটাভুটি করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, গতকল দিল্লি সার্ভিসেস বিল নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনার পর ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। তবে ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়েছিল। এর জেরে ব্যালটে হয় সেই ভোট। এর জেরে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রায় ২০ মিনিট লাগে। এই আবহে রাজীব শুক্লা দাবি জানান, জগদীপ ধনখড় যেন দোষীদের 'বকে দেন'। এদিকে এই সময় জগদীপ ধনখড় জানান, তিনি নিয়ম মাফিক সংসদের কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করেন। তিনি আরও বলেন, 'যদি কোনও ভুল হয়, আমি তা শুধরে নিয়ে থাকি। আগের দিনই ডেরেক ও'ব্রায়েন দু'টি বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি সঠিক ছিলেন। তাই আমি নিজে সেই বদল করেছিলাম।'
এরপরই মণিপুর ইস্যুতে আলোচনা চেয়ে বিরোধীরা হট্টগোল শুরু করে। তখন জগদীপ ধনখড় বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই উচ্চ কক্ষে নিজের বক্তব্য পেশ করেছেন। এরপরই 'পয়েন্ট অফ অর্ডার' ডেকে ওঠেন ডেরেক ও'ব্রায়েন। এদিকে পয়েন্ট অফ অর্ডার ডেকে সংশ্লিষ্ট নিয়মের উল্লেখ না করেই তিনি নিজের বক্তব্য পেশ করেন। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ হন চেয়ারম্যান ধনখড়। ডেরেক বলেন, 'আমরা মণিপুর ইস্যুতে আলোচনা চাই। তবে সরকার পক্ষ যেভাবে এই আলোচনা চাইছে, আমরা তা চাই না।' এরপর ধনখড় তাঁকে বসিয়ে দিয়ে পয়েন্ট অফ অর্ডারের নিয়মাবলীর ক্রমতালিকা জিজ্ঞেস করেন। সেই সময় ডেরেক বলে ওঠেন, '৯২ নম্বর পাতার ২৬৭ নং নিয়ম'। এরপরই আরও তীব্র হয় হট্টগোল। ধনখড় নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়েন ক্ষণিকের জন্য। এরপর রাজ্যসভার নেতা পীযূষ গোয়াল ডেরেকের সাসপেনশনের প্রস্তাব দেন। তার প্রেক্ষিতে রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতাকে অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন ধনখড়। এরপর অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করে তিনি নিজেও কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান।