সোনির সঙ্গে ১০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সংযুক্তিকরণ চুক্তি ভেঙেছে। যদিও ফের একবার সেই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্যে নাকি দুই সংস্থা আলোচনার টেবিলে বসেছে। তবে এরই মধ্যে আরও বিপাকে পড়ল জি মিডিয়া। রিপোর্ট অনুযায়ী, জি এন্টারটেনমেন্ট এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের অ্যাকাউন্টে ২৪১ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২০০০ কোটি টাকার গরমিল খুঁজে পেয়েছে সেবি। ব্লুমবার্গের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, জি-এর অ্যাকাউন্ট থেকে ২৪১ মিলিয়ন ডলার 'উধাও'। এবং সেই অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কোনও নথি বা তথ্য পায়নি সেবি। এই আবহে আজ জি-এর শেয়ার দর প্রায় ১৩ শতাংশ পড়ে যায়। (আরও পড়ুন: এল মঙ্গলবার্তা, ফের কাজ করছে অনেকের 'নিষ্ক্রিয়' আধার, তবে মিটছে না বিতর্ক)
আরও পড়ুন: যেই ধারায় রামমন্দির মামলার রায়, তাতেই চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনের ভোট গণনা SC-তে
উল্লেখ্য, মার্জার সম্পন্ন হলে নয়া সংস্থার অধীনে থাকত ৭০টি চ্যানেল। তবে এই মার্জার আর হবে না। সোনির তরফ থেকে জি-কে চুক্তি বাতিলের চিঠি পাঠানো হয় কয়েকদিন আগেই। শুধু তাই নয়, চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে জি-এর থেকে ৯০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণেরও দাবি করা হয় সোনির তরফ থেকে। জানা গিয়েছে, এর আগেই এই সংযুক্তিকরণ চুক্তির থেকে ২০০ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল জি-এর বিরুদ্ধে। সেবি এই নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। এরই মাঝে আবার সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়, সোনি-জি চুক্তিতে ২০০ কোটি নয় বরং ১০০০ কোটির তছরুপ করেছে জি এন্টারটেনমেন্ট। আর এবার দাবি করা হল, ১৯৯৮ কোটি টাকার গরমিলের খোঁজ পেয়েছে সেবি। এই আবহে জি-এর শীর্ষ কর্তা পুনীত গোয়েঙ্কা এবং জি-এর কর্ণধার সুভাষ চন্দ্রকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাবে সেবি। এছাড়া পুনীতের ওপর জরিমানা ধার্য করা হতে পারে বলেও জানা যাচ্ছে রিপোর্টে।
এদিকে সোনি এবং জি-এর সংযুক্তিকরণের চুক্তি বাস্তবায়িত করতে কয়েকদিন আগেই আবেদন জানানো হয়েছিল জাতীয় কোম্পানি ল' ট্রাইবুনালে। এই আবহে এবার ইকোনমিক টাইমস একটি রিপোর্টে দাবি করল, ১০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের এই সংযুক্তিকরণ চুক্তিকে ফের বাস্তবায়িত করতে 'শেষ চেষ্টা' করতে চলেছে জি এবং সোনি। গত দুই সপ্তাহে এই নিয়ে অনেক দূর কাজ এগিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। উভয় সংস্থারই কর্তারা এর সঙ্গে যুক্ত আছেন। তবে সূত্রের খবর, এখনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দুই সংস্থা একমত হতে পারছে না। এই আবহে ফের একবার আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে এই সংযুক্তিরণের 'শেষ চেষ্টা' নিয়ে জি এবং সোনিকে প্রশ্ন করা হলে সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে কোনও জবাব দেয়নি তারা।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই নয়া সংস্থ স্থাপনের কথা ছিল। তবে ডেডলাইন পার হলেও সোনি এবং জি-র সংযুক্তিকরণ সম্ভব হয়নি। এই আবহে নয়া বছরে জি-এর হাত ছাড়ার কথা জানায় সোনি। এর আগে দুই মিডিয়া সংস্থার সংযুক্তিকরণের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের সবুজ সংকেত মিলেছিল ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে। এই আবহে গত ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনাল বা এনসিএলটি অনুমোদন দিয়েছিল জি এবং সোনির সংযুক্তিকরণে। এই সবুজ সংকেত আসতেই শেয়ার বাজারে জি-এর স্টকের দর ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। তবে এই সংযুক্তিকরণ আর বাস্তবায়িত হবে না।