একজন স্ত্রীর কি তার স্বামীর আধার কার্ডের তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে? সেই প্রশ্ন রয়েছে অনেকেরই। এ নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। একটি মামলার শুনানিতে এই সংক্রান্ত বিষয়টি স্পষ্ট করল কর্ণাটক হাইকোর্ট। এবিষয়ে গোপনীয়তাকেই প্রাধান্য দিল হাইকোর্ট। আদালত স্পষ্ট বলেছে, বিয়ে গোপনীয়তার অধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে না। একজন স্ত্রী শুধুমাত্র বিয়ের নামে একতরফাভাবে স্বামীর আধার কার্ডের তথ্য পেতে পারেন না। একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছে বিচারপতি এস সুনীল দত্ত যাদব এবং বিজয়কুমার এ পাটিলের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: কেউ নাগাল পাবে না আপনার আধার কার্ডের! জেনে নিন কীভাবে সব তথ্য সুরক্ষিত রাখবেন
জানা গিয়েছে, কর্ণাটকের হুবলির এক মহিলা ফ্যামিলি আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে খোরপোষ চেয়ে মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় আদালত ওই ব্যক্তিকে স্ত্রীর জন্য ১০ হাজার টাকা এবং কন্যার জন্য ৫ হাজার টাকা খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তাদের বিয়ে হয়েছিল ২০০৫ সালে। তাদের একটি মেয়ে রয়েছে। তবে সম্পর্কে সমস্যা দেখা দিলে স্ত্রী আইনি ব্যবস্থা নেন। আদালতের সেই আদেশ কার্যকর করার জন্য মহিলা তার স্বামীর আধার কার্ডের তথ্য পেতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তার স্বামী বর্তমানে কোথায় থাকেন তা তিনি জানেন না। তাই তিনি তাকে আদালতের আদেশের প্রতিলিপি পাঠাতে পারছেন না। থলে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে গেলে তার স্বামীর অবস্থান জানা প্রয়োজন। এই যুক্তি জানিয়ে তিনি আধার অফিসে যোগাযোগ করেছিলেন।
সেখানে তিনি স্বামীর তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। তবে আধার অফিসের তরফে তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। তাদের তরফে বলা হয় এর জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ প্রয়োজন। এরপর মহিলা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্টের আদেশের উল্লেখ করে জানায় যে অন্য ব্যক্তিরও কোনও তথ্য প্রকাশের আগে তার মতামত জানার প্রয়োজন। পরে বিষয়টি সিঙ্গেল বেঞ্চে পাঠানো হয়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিঙ্গল বেঞ্চ ওই মহিলার স্বামীকে নোটিশ জারি করার জন্য আধার অফিসকে নির্দেশ দেয়। পরে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় আধার অফিস। সেই মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বিয়ে হল দুই ব্যক্তির মধ্যে সম্পর্ক। তবে তা গোপনীয়তার অধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে না। এটা একজন মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার।