গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এক ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, নির্বাচনী বন্ড অসাংবিধানিক। এই আবহে ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে যাবতীয় তথ্য জমা করতে নির্দেশ করা হয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াতে। তবে এই তথ্য জমা দেওয়ার জন্য আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চেয়েছিল দেশে সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। তবে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া সময়সীমা শেষ হতেই আদালত অবমাননার মামলার আবেদন করা হল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে। আজ শীর্ষ আদালতে এই আবেদন জানানো হয়, অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মের তরফ থেকে। (আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটের মুখে হাতিয়ার সেই CAA, কংগ্রেস কি বাংলার মতুয়াদের চটাবে নাকি অসমকে?)
আরও পড়ুন: শ্রীনগরে মোদীর সভায় বিশাল জনসমাগমের পূর্বাভাস ওমর আবদুল্লার, করলেন বিস্ফোরক দাবি
আজ অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মের তরফ থেকে শীর্ষ আদালতে অবমাননার মামলার আবেদন জানান আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। এর আগে গত ৪ মার্চ এসবিআই-এর তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করে দাবি করে, তাদের যেন নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য জমা দিতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। এসবিআই দাবি করে, নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য 'ডিকোড' করতে তাদের সময় লাগতে পারে। এই গোটা প্রক্রিয়াকে খুব জটিল বলে দাবি করেছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এদিকে এসবিআই-এর এই আবেদন মেনে নিয়ে যদি তথ্য জমার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়, এর অর্থ, লোকসভা নির্বাচনের পরেই এই সংক্রান্ত তথ্য জনসমক্ষে আসবে। ব্যাঙ্কের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মোট ২২ হাজার ২১৭টি নির্বাচনী বন্ড বিক্রি করা হয়েছে এতদিনে। (আরও পড়ুন: আসন ভাগাভাগি নিয়ে জটিল অঙ্ক, এবার শিন্ডে আর অজিত পাওয়ারের দল 'ভাঙাবে' BJP?)
আরও পড়ুন: ফের কমলের পদ্ম যোগের জল্পনা, মধ্যপ্রদেশে রাহুলের যাত্রায় নেই নাথ গড়ের ৭ কংগ্রেস বিধায়ক
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ ও অসম বিধানসভা নির্বাচেনর আগে নির্বাচনী বন্ডের বিরোধিতায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক দলগুলির অবৈধ এবং বিদেশ থেকে এই বন্ডের মাধ্যমে টাকা পেতে পারে এবং এতে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। এই আবহে আদালতে কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছিল, নির্বাচনে কালো টাকা রুখতেই নির্বাচনী বন্ডের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। তার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে শীর্ষ আদালতকে বলা হয়েছিল, নির্বাচনী বন্ডের তথ্যের বিষয়ে জানার অধিকার নেই আম নাগরিকের। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ডের স্কিম আনা হয়। তার পর থেকে কোনও বাধা ছাড়াই বন্ড বিক্রি করা হচ্ছিল দেশে। এদিকে নির্বাচন কমিশনের তরফে সর্বোচ্চ আদালতকে জানানো হয়েছিল, রাজনৈতিক দলগুলির হাতে নগদের অভাব থাকায় নির্বাচনী বন্ড বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কমিশনের দাবি, নির্বাচনী বন্ডে কোনও অস্বচ্ছতা নেই। তবে দুই পক্ষের সওয়ল জবাব শুনে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ ঐতিহাসিক রায়তে জানিয়ে দেয়, নির্বাচনী বন্ড বিক্রি করে রাজনৈতিক দলগুলি যেভাবে টাকা তুলছে, তা আদতে অসাংবিধানিক।