শনিবার পৃথিবীতে আঘাত হানবে ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়। বৃহস্পতিবার সূর্যের পাঁচটি সান-স্পট ক্লাস্টারের একটি থেকে কয়েক লক্ষ টন আয়নযুক্ত গ্যাস বিস্ফোরিত হয়। এর ফলে জিপিএস সংকেত, কৃত্রিম উপগ্রহ এবং বিদ্যুৎ গ্রিড প্রভাবিত হতে পারে। ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের ফলে হাডসন ভ্যালি নিউইয়র্ক পর্যন্ত দক্ষিণেও মেরুজ্যোতি দেখা যেতে পারে।
NASA-র সোলার ডায়নামিক্স অবজারভেটরি সূর্যের একটি 'লক্ষণীয় সৌরশিখা' ক্যাপচার করেছে। শুক্রবার মার্কিন মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে যে, বৃহস্পতিবার সূর্য থেকে X1-শ্রেণীর শিখা নির্গত হয়েছে। এ বিষয়ে টুইটও করেছে নাসা।
নাসা জানিয়েছে যে এক্স-ক্লাস বলতে সবচেয়ে তীব্র ফ্লেয়ারকে বোঝায়। একটি X2 ক্লাস একটি X1 এর চেয়ে দ্বিগুণ তীব্র, আবার একটি X3 তিনগুণ তীব্র। বৃহস্পতিবার যখন এই সোলার ফ্লেয়ার বা শক্তিশালী বিকিরণের বিস্ফোরণ হয়েছিল, তখন এটি একটি শক্তিশালী রেডিও ব্ল্যাকআউট ঝড় সৃষ্টি করেছিল। এর ফলে কিছু উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়ো সম্প্রচার এবং কম-ফ্রিকোয়েন্সির নেভিগেশন ব্যাহত হতে পারে।
Spaceweather.com-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, AR2887 নামক একটি সানস্পট থেকে এই শিখার উদ্ভব হয়েছে। বর্তমানে এই সানস্পট সূর্যের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। অভিমুখ পৃথিবীর দিকে।
ইউএস স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার (SWPC) বলেছে যে X1-শ্রেণির ফ্লেয়ারের কারণে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আমেরিকায় অস্থায়ী, কিন্তু শক্তিশালী রেডিয়ো ব্ল্যাকআউট হয়েছে।
SWPC-র ডিরেক্টর উইলিয়াম মুরতাঘ বলেন, 'পাঁচটি সানস্পট ক্লাস্টারের মধ্যে কেবল দুটি পৃথিবীতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। নাসার মতে, X1-ফ্লেয়ার শনিবার পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে।'
সৌর শিখা থেকে ক্ষতিকারক বিকিরণ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কারণে মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে না। তবে এতে জিপিএস এবং কমিউনিকেশন সিগন্যালের স্তরের বায়ুমণ্ডলে প্রভাব পড়তে পারে।
যখন এই তীব্র শিখাগুলি সরাসরি পৃথিবীর দিকে আসে, তখন তার সঙ্গে সৌর কণাগুলির বিশাল বিস্ফোরণও হতে পারে। একে 'করোনাল মাস ইজেকশন' বলা হয়। SWPC বলছে যে বৃহস্পতিবারের X1-শ্রেণীর ফ্লেয়ারও করোনাল ভর ইজেকশনের আভাস রয়েছে।
সৌর শক্তির তরঙ্গের প্রভাবে উত্তর গোলার্ধে অপূর্ব মেরুজ্যোতি দেখা যেতে পারে। যখন সৌরশক্তির একটি তরঙ্গ পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে আঘাত করে তখন এটি প্রায়শই তীব্র মেরুজ্যোতি সৃষ্টি করে। এটি আকাশে সবুজ, গোলাপি রঙিন ফিতে বা বিচ্ছুরণের সৃষ্টি করে।
'আমাদের অনুমান, প্রাথমিক প্রভাব দিনের আলোর সময় ঘটবে। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উত্সাহীরা সঙ্গে সঙ্গে মেরুজ্যোতি দেখতে পাবেন না। তবে ৩০ থেকে ৩১ অক্টোবর রাতে দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে,' ব্লুমবার্গকে জানান SWPC-র ডিরেক্টর উইলিয়াম মুরতাঘ।
সৌর ঝড়টিকে G3 হিসেবে রেট দেওয়া হয়েছে। এই G3 স্তরে পাওয়ার গ্রিডে প্রভাব নগণ্য। তাই খুব চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।