বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তকমা পেল উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ। বায়ুদূষণের মাত্রা কয়েক ধাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এল দিল্লি।
মঙ্গলবার আইকিউএয়ার এয়ার ভিস্যুয়াল সংস্থা প্রকাশিত বিশ্বের বায়ুমান রিপোর্টে জানা গিয়েছে, গত তিন বছরে চিনের বড় ও মাঝারি শহরগুলিতে বায়ুদূষণের মাত্রা অনেকটাই কমেছে। পাশাপাশি, দূষণের পারদ চড়েছে ভারতের শহরাঞ্চলে। অবস্থা এমনই যে, বায়ুদূষণ তালিকার প্রথম কুড়িটি শহরের মধ্যে স্থান পেয়েছে এ দেশের ১৪টি নগর।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন সরকারি নীতি প্রণয়ন করা সত্ত্বেও দিল্লির বায়ু দূষণ বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত। এর ফলে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বড় শহরগুলির শীর্ষে রয়েছে ভারতের রাজধানীর নাম। আর বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে তালিকার এক নম্বরে জায়গা পেয়েছে দিল্লি সংলগ্ন গাজিয়াবাদ।
রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, বিশ্বে দূষণের নিরিখে এগিয়ে রয়েছে এশিয়ার বেশ কিছু শহর। জানা গিয়েছে, জনসংখ্যা স্ফীতি, গাড়ি থেকে বের হওয়া ধোঁয়া, তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রের জন্য নির্গত কয়লার ধোঁয়া, কৃষিক্ষেত্রে উত্পন্ন ধোঁয়া এবং শিল্পক্ষেত্র থেকে নির্গত ধোঁয়াই বায়ুদূষণ বাড়ানোর প্রধান কারণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ জানয়েছে, বায়ুদূষণের ফলে প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১.৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি বিশ্ব ব্যাঙ্কের হিসেব বলছে, বায়ুদূষণের জেরে গোটা বিশ্বে বছরে প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিসাধন হয়।
কড়া শাসননীতি আরোপ করে তিন বছর ধরে ধাপে ধাপে দূষণের মাত্রা নামাতে সফল হয়েছে চিন। উলটো দিকে ভারতে রাজনীতিকরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন বৃদ্ধিতে জোর দেওয়ার ফলে বায়ুদূষণের মাত্রা লাফিয়ে বাড়ছে। এ ছাড়া, দেশের অধিকাংশ নাগরিকই স্বাস্থ্য সচেতন নন। এর জেরে ভারতে বায়ুদূষণ কমাতে ব্যর্থ হচ্ছে বিভিন্ন তত্পর সংস্থা, জানিয়েছে রিপোর্ট।
সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে এবং গৃহস্থের ঘরে ঘরে এলপিজি সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়ার নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রয়াস প্রশংসিত হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলিতে অত্যধিক কয়লার ব্যবহার, নির্মাণশিল্পের বে-লাগাম বৃদ্ধি এবং দ্রুত হারে বেড়ে চলা গাড়ি ও মোটরসাইকেল থেকে নির্গত ধোঁয়ার পরিমাণ। দূষণ বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার আঙুল উঠেছে সরকারের নীতি প্রণয়ন নিয়ে ঢিলেঢালা মনোভাবের দিকেও।