টিকা নয়, আন্তর্জাতিক যাতায়াতের জন্য করোনাভাইরাস পরীক্ষার উপর জোর দেওয়া হোক। কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ছাড়পত্র না পাওয়ার মধ্যে রাশিয়ায় এমনই দাবি তুললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
শুক্রবার রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে জয়শংকর বৈঠক করেন। বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘আগে নমুনা পরীক্ষা এবং গন্তব্যে পৌঁছানোর নমুনা পরীক্ষা - সেটাই ভ্রমণের জন্য যথেষ্ট।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘কয়েকটি দেশ এখন টিকাকরণের নিয়ম চালু করেছে। সেই পরিস্থিতিতে আমাদের কোনও একটা বোঝাপড়া করতে হবে।’
গত ১ জুলাই থেকে ‘গ্রিন পাস’ বা ডিজিটাল করোনা শংসাপত্র চালু করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। যে যাত্রীদের কাছে সেই ‘গ্রিন পাস’ থাকবে, তাঁরা কাজ বা পর্যটনের সূত্রে বাধাহীনভাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের গোষ্ঠীভুক্ত দেশের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে পারবেন। ‘গ্রিন পাস’ টিকাকরণের শংসাপত্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সেইসঙ্গে সম্প্রতি করোনা-মুক্ত হওয়া বা করোনার বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার শংসাপত্র হিসেবে বিবেচনা করবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলি। কিন্তু যে টিকাগুলিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে নেই কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন। তা নিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দ্বারস্থ হয় ভারত। জানানো হয়, যদি কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনকে অনুমোদন দেওয়া হয়, তাহলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশের নাগরিকদের ভারতে পৌঁছে বাধ্যতামূলক নিভৃতবাসে থাকতে হবে না। তাতেও অবশ্য এখনও চিঁড়ে ভেজেনি। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলি নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সির অনুমোদন ছাড়া টিকাপ্রাপ্ত যাত্রীদের সেই দেশে ঢোকার ছাড়পত্র দেওয়া হবে কিনা।
তারইমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন একটি ওয়েবমিনারে বলেছেন, ‘অনুমোদন পাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে চলতে হয়। সুরক্ষাজনিত তথ্য, সম্পূর্ণ ট্রায়ালের তথ্য পেশ করতে হয় সংস্থাগুলিকে। এমনকী অনুমোদন পাওয়ার জন্য উৎপাদনের গুণমান সংক্রান্ত তথ্যও দিতে হয়। ইতিমধ্যে ভারত বায়োটেক (কোভ্যাক্সিনের প্রস্তুতকারক) তথ্য জমা দেওয়া শুরু করেছে। ডসিয়ার খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরপর আমাদের কমিটি ভারত বায়োটেকের করোনাভাইরাস টিকার পর্যালোচনা করবে। অনুমোদন মিলবে কিনা, তা আগামী চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’