বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে জোরদার ধাক্কা খেল গুজরাট সরকার। সোমবার শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছে, ১১ জন দণ্ডিতকে যে আগাম মুক্তি দিয়েছিল গুজরাট সরকার, তা অধিকার-বহির্ভূত। অর্থাৎ দণ্ডিতদের মুক্তি দেওয়ার কোনও অধিকার নেই গুজরাট সরকারের। সেই পরিস্থিতিতে ১১ জন দণ্ডিতকে ফের জেলে ফিরে যেতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে যে দণ্ডিতদের ২ সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তারইমধ্যে রাধেশ্যাম নামে এক দণ্ডিতকে তুমুল ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ। তথ্য গোপন করে ২০২২ সালে মে'তে সুপ্রিম কোর্টের থেকে নিজের অনুকূল রায় পাওয়ার জন্য তাকে তুমুল ভর্ৎসনা করা হয়েছে। যে রায়ের হাত ধরে ১১ জন দণ্ডিতের আগাম মুক্তির পথ প্রশস্ত হয়েছিল। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, জালিয়াতির মাধ্যমে ২০২২ সালে মে'র রায় মিলেছিল। যা আইনের পক্ষে ভালো নয়।
কেন গুজরাট সরকারের সেই অধিকার নেই, সেটাও ব্যাখ্যা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, বিলকিস মামলায় দণ্ডিতদের আগাম মুক্তি দেওয়ার ক্ষমতা নেই গুজরাট সরকারের। দণ্ডিতদের আগাম মুক্তি দেওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি লাগত। অর্থাৎ যেখানে ঘটনা ঘটেছে বা যেখানে দণ্ডিতরা সাজা ভোগ করছে, সেটা আগাম মুক্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আগাম মুক্তির ক্ষেত্রে সঠিক সরকারের সংজ্ঞাটা আলাদা। যে রাজ্য সরকারের অধীনে দণ্ডিতদের শুনানি হয়েছে, সাজা পেয়েছে, সেই রাজ্যই হল আসল 'সরকার'। যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেটার থেকে এখানে গুরুত্বপূর্ণ হল সেই স্থান, যেখানে মামলার শুনানি হয়েছে।
আরও পড়ুন: Bilkis Bano Case: সাজাপ্রাপ্তদের আগাম মুক্তি কি মৌলিক অধিকার? বিলকিস মামলায় প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
সেই প্রেক্ষিতে দণ্ডিতদের আগাম মুক্তির যে নির্দেশিকা জারি করেছিল গুজরাট সরকার, তা খারিজ করে দেয় বিচারপতি নাগারত্ন এবং বিচারপতি ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিলকিস মামলায় দণ্ডিতদের আগাম মুক্তির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে পারে মহারাষ্ট্র সরকার। কিন্তু সেই কাজটা করার অধিকার নেঅ গুজরাট। যে রাজ্যে ২০০২ সালে হিংসার সময় বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। হত্যা করা হয়েছিল তাঁর পরিবারের সদস্যদের। তারপর ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট দণ্ডিতদের মুক্তি দিয়েছিল গুজরাট সরকার।