এখন বাংলাদেশের বাজারে ইলিশ মাছের নাকি আকাল দেখা দিয়েছে। সুতরাং বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ অনেকটাই কম। মাছ বিক্রেতাদের দাবি, ২০২২ সালের তুলনায় এবার ইলিশ মাছের সরবরাহ কমেছে প্রায় এক–চতুর্থাংশ। আর ২০২২ সালের থেকে ইলিশ মাছের দাম বেড়েছে অন্তত ৫০ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে বাজারে গিয়ে হাত পুড়ছে ক্রেতাদের। বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হওয়ায় পকেটে বেশ চাপ পড়ছে গৃহস্থ মানুষজনের। যদিও ভারতকে টন টন ইলিশ মাছ এবার পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। পদ্মার ইলিশের স্বাদ এপার বাংলা অনেকদিন ধরেই চেখেছে।
সেখানে ওপারে যেন হাহাকার। কারণ বাজারে এখন এক কেজির একটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। এই বিপুল পরিমাণ দামে কিনতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে আমজনতার। আর ব্যবসায়ীরা জানচ্ছেন, ইলিশ মাছের অভাব থাকায় অন্যান্য মাছ মানুষ বেশি কিনছেন। তার জেরে দাম বেড়েছে প্রায় সব মাছের। সুতরাং এখন মাছ কার্যত মহার্ঘ হয়ে দাঁড়িয়েছে পদ্মাপারের বাজারগুলিতে। তার উপর ১২ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে টানা ২২দিন। অভাব তাই আরও বাড়বে। দামও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই বিষয়ে বাংলাদেশের বাসিন্দা নূর হামিদ বলেন, ‘রোজ দাম বাড়ছে। এই চড়া দামের জেরে ইলিশ বা দেশি মাছ খাওয়া বেশ চাপের হয়ে পড়েছে। এমনকী চাষের মাছও কিনতে পারছি না।’
কেমন দাম যাচ্ছে মাছের? ঢাকার মগবাজার, শাহজাহানপুর, মালিবাগ এবং রামপুরা বাজারে আড় মাছ ৭০০–৮০০ টাকা, বোয়াল ৬০০–৭০০ টাকা, বেলে ৮০০–১০০০ টাকা এবং কাচকি মাছ ৬০০–৭০০ টাকা। আর বাগদার দাম ৭০০–৭৫০ টাকা কেজি প্রতি। সেখানে গলদার পৌঁছেছে ১২০০–১৪০০ টাকা। তুলনামূলক রুইমাছের দাম ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিকোচ্ছে। পাবদা, কই মাছের দামও বাড়ছে। মাছ বিক্রেতা আমিনূল বলেন, ‘এবার বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। তাই অন্যান্য মাছের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘বিজেপির উপর চাপ বাড়ছে বলেই এজেন্সি নামানো হল’, সিবিআই হানা নিয়ে পাল্টা কুণাল
আর কী জানা যাচ্ছে? নিজের দেশেই বিখ্যাত রূপোলি ফসল হলেও তা চড়া দামে কিনতে হওয়ায় মন ভাল নেই ওপারের বাসিন্দাদের। এই বিষয়ে ফিশ ফার্ম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের সভাপতি মহম্মদ শামসুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘চাষের মাছের খাদ্যের দাম বেড়েছে। তাই মাছ উৎপাদনের খরচও বেড়েছে। সুতরাং বাজারে সব মাছের দাম বেড়েছে।’ মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, ২০১১–১২ অর্থবর্ষে দেশে মাছের উৎপাদন ছিল ৩২ লাখ টন। ২০২১–২২ অর্থবর্ষে উৎপাদন বেড়েছে ৪৭ লাখ ৫৯ হাজার টন। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। তবে মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, শুধু হ্যাচারিতে না করে, বড় জলাশয়ে চাষ করলে মাছের বৈচিত্র্য বাড়বে। দামও কমবে।