ভারতে প্রতি বছর প্রায় ৭৪ মিলিয়ন বা ৭.৪ কোটি টন খাদ্যশস্য নষ্ট হয়। যা ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে দেশের উৎপাদিত মোট খাদ্যশস্যের ২২ শতাংশ অন্যদিকে এই নষ্টের পরিমাণ দেশে উৎপাদিত মোট শস্যের ১০ শতাংশ। সারা বিশ্বে প্রতি বছর ৯৩.১ কোটি টন খাদ্যশস্য নষ্ট করা হয়। এর মধ্যে ভারতেই নষ্ট হয় প্রায় ৮ শতাংশ। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর)-এর বিজ্ঞানীরা এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। গত সপ্তাহে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় খাদ্যের ক্ষতি ও বর্জ্য প্রতিরোধ’ বিষয়ে একটি কর্মশালা আয়োজিত হয়েছিল। সেই কর্মশালাতেই এই তথ্যগুলি জানান বিজ্ঞানীরা। বিশেষজ্ঞদের কথায়, ফসল কাটার পর প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য ফেলে দিতে হয়। তবে এর পরিমাণ পৃথিবীর নানা জায়গায় নানারকম।
(আরও পড়ুন: ইনফোসিসের আমেরিকার ইউনিটে সাইবার হানা! মূর্তির মন্তব্যই দায়ী? জল্পনা তুঙ্গে)
ফসল কতদিন সংরক্ষণ করা যাবে তা নির্ভর করে জলবায়ু, ফসল চাষের পদ্ধতি, সংরক্ষণ পদ্ধতি ও বাজারের চাহিদার উপর। এছাড়াও খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস ও সাংস্কৃতিক বিষয়ের উপরেও নির্ভর করে ফসল সংরক্ষণের মেয়াদ। সেই মাফিক ভারতের মতো আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশে খাবার নষ্টের হার রীতিমতো বিপজ্জনক বলেই মনে করছেন অনেকে। ইউনাইটৈড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের (ইউএনএপি) তরফে সম্প্রতি ফুড ওয়েস্ট রিপোর্ট ২০২১ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্ব জুড়ে ‘খাবার’ বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ছে গৃহস্থের গাফিলতিতেই। সারা বিশ্বে প্রতি বছর মাথাপিছু ১২১ কেজি খাবার বর্জ্যে পরিণত হয়। এর মধ্যে ৭১ কেজি খাবার নষ্ট হয় গৃহস্থ বাড়িতেই। বাকি ৪০ কেজি খাবার নষ্ট হয় খাবারের দোকানে ও খুচরো পণ্যের দোকানে।
(আরও পড়ুন: মিশর নয়, অন্য এক দেশের মাটির তলায় রয়েছে পৃথিবীর প্রাচীনতম পিরামিড! কোথায় সেটি)
ওই কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন ইউএনএপি-এর কেমন্টাইন ওকনর। তিনি বলেন, প্রায় ২৮ শতাংশ কৃষিজমিতে উৎপাদিত খাবার কোনও কাজেই লাগে না। প্রতি বছর সেই খাবার নষ্ট হয়। আইসিএআর-এর প্রধান হিমাংশু পাঠক এর জন্য দায়ী করেছেন সংরক্ষণ ব্যবস্থাকেই। দেশের অধিকাংশ জায়গায় সংরক্ষণ ব্যবস্থা ঠিকমতো নেই বলেই খাবার দীর্ঘদিন মজুত রাখা যায় না। একটা সময়ের পর খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে সেই খাবার। ফলে বর্জ্য পদার্থে পরিণত হয়। নষ্ট হওয়া খাবারের মধ্যে শস্য, বীজের পাশাপাশি রয়েছে মাছ, মাংস, ডিম, সামুদ্রিক খাবারও।