পাকিস্তানের পেশ করা সাম্প্রতিক ফেরার সন্ত্রাসবাদী তালিকা নিয়ে আপত্তি জানাল ভারত।তালিকায় ২০০৮ সালের মুম্বই হামলায় জড়িত ১৯ অভিযুক্তের নাম থাকলেও ‘প্রধান ষড়যন্ত্রী ও নাটের গুরুর নাম উহ্য রাখা হয়েছে’ বলে অভিযোগ দিল্লির।
পাকিস্তানের ফেডেরাল ইনভেস্টিভেশন এজেন্সি-র (এফআইএ) ওয়েবসাইটে সন্ত্রাসবাদীদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তার অধিকাংশ জুড়েই রয়েছে মুম্বইয়ে হামলাকারী পাকিস্তান থেকে নৌকাযোগে ভারতে পৌঁছানো জঙ্গিদের নাম। সেই সঙ্গে রয়োেছে, হামলাকারীদের আর্থিক সাহায্যকারীদের উল্লেখ। এই ১৯ জঙ্গির বেশির ভাগই লস্কর-ই-তৈবা সদস্য।
ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তবের দাবি, ‘পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে, ২৬/১১ মুম্বই হামলায় জড়িত পাক নাগরিক-সহ ১৯ সন্ত্রাসবাদীর সাম্প্রতিক তালিকা প্রকাশ করেছে এফআইএ। তালিকায় উল্লিখিতদের অধিকাংশই রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাসবাদী তালিকায় থাকা লস্কর-ই-তৈবার সদস্য পাক নাগরিক। এর মধ্যে রয়েছে মুম্বইতে হামলা চালানোর উদ্দেশে পাকিস্তান থেকে নৌকাযোগে ভারতে পৌঁছানো জঙ্গিরাও। কিন্তু ওই সন্ত্রাস হানার প্রধান চক্রীদের ও মুখ্য চক্রান্তকারীর নাম তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।’
মুম্বই হামলার প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে এর আগেই লস্কর প্রতিষ্ঠাতা লাহোর জেলে বন্দি জঙ্গিনেতা হাফিজ সইদের নাম উল্লেখ করেছে ভারত। কিন্তু পাকিস্তান বার বার জানিয়েছে, হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী হামলায় যুক্ত থাকার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ‘মুম্বই হামলা পাক ভূখণ্ড থেকে পরিকল্পিত, পরিচালিত এবং সূচিত হয়েছিল। তালিকা থেকে স্পষ্ট যে, মুম্বই সন্ত্রাস হানায় জড়িত মূল চক্রীদের সম্পর্কে পাকিস্তানের কাছে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।’
তাঁর অভিযোগ, ‘সমস্ত প্রকাশ্য স্বীকৃতি এবং প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ হাতে থাকা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত ১৫টি দেশের ১৬৬ টি পরিবারের প্রতি সুবিচারের উদ্যোগ নেয়নি পাকিস্তান সরকার।’
এ পর্যন্ত মুম্বই হামলায় পরিকল্পনা, আর্থিক সহায়তা ও সমর্থনের অভিযোগে লস্কর কম্যান্ডার জাকিউর রহমান লখভি-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পাকিস্তান। ২০১৫ সালে জামিন পেয়ে যায় লখভি, এর পর থেকে তার সম্পর্কে কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ভারত ও আমেরিকার দেওয়া কয়েক ডজন আধিকারিক ও অন্যান্য সাক্ষীর বয়ান জমা পড়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের সন্ত্রাস দমন আদালতে সাত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলারও কোনও অগ্রগতি হয়নি।
এফআইএ-র সাম্প্রতিক তালিকায় থৈাকা ১৯ সন্ত্রাসবাদীর মধ্যে রয়েছে লস্কর সদস্য মহম্মদ আমজাদ খান, যে ভারতে পৌঁছানোর জন্য ‘আল ফৌজ’ নামে নোকা ও অস্ত্রশস্ত্র কিনেছিল। তালিকায় রয়েছে আর এক লস্কর সদস্য ইফতিকার আলি, যে মুম্বইয়ে হামলাকারীদের যোগাযোগের জন্য ভিওআইপি কানেকশন কিনেছিল এবং লস্কর-এর তৃতীয় সদস্য শাহিদ গফুর, যে আল ফৌজের ক্যাপ্টেন হিসেবে কাজ করেছিল। এ ছাড়া চতুর্থ এক লস্কর জঙ্গির নামও তালিকায় রয়েছে। মহম্মনদ খান নামে ওই জঙ্গি মুম্বই হামলার জন্য ব্যবহৃত ‘আল হুসেইনি’ নামে নৌকাটি সরবরাহ করেছিল।