নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা। পালটা চিঠি দিয়ে রবিবার ভারত সরকারের তরফে দাবি করা হল, বাকস্বাধীনতার উপর প্রভাব পড়বে বলে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, তা একেবারে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। ভারতের গণতন্ত্রের গুণগান গেয়ে কেন্দ্রের দাবি, বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই নয়া নীতি ঠিক করা হয়েছে।
গত ১১ জুন রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠির প্রত্যুত্তরে রবিবার রাষ্ট্রসংঘে ভারতীয় স্থায়ী প্রতিনিধি বলেছেন, ‘২০১৮ সালে বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজ, শিল্প সংগঠন এবং সংস্থার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছিল এবং খসড়া নীতি তৈরির জন্য মানুষের মতামত চাওয়া হয়েছিল। বিস্তারিতভাবে সে বিষয়ে আলোচনা করেছিল আন্তঃমন্ত্রিগোষ্ঠী। তারপর চূড়ান্ত নীতি তৈরি করা হয়েছিল।’
চলতি বছরে ২৫ ফেব্রুয়ারি নয়া তথ্যপ্রযুক্তি আইন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কেন্দ্র। যা ২৫ মে থেকে কার্যকর হয়েছে। তারপর থেকেই সেই নীতি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তারইমধ্যে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের নীতির সঙ্গে খাপ খাচ্ছে না ভারতের নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতি। নীতির কয়েকটি অংশ নিয়ে ‘গুরুতর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানান, মধ্যস্থতাকারীদের উপর যে নজরদারির নিয়ম চালু করা হয়েছে, তাতে একাধিক ক্ষেত্রে মানবাধিকার ভঙ্গের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।
রবিবার কেন্দ্রের তরফে একটি বিবৃতি জারি করা জানানো হয়, রাষ্ট্রসংঘের স্থায়ী সদস্য জানিয়েছেন যে নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতির ফলে বাকস্বাধীনতার উপর সম্ভাব্য যে প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, তা ভুলভাবে উপস্থাপনা করা হচ্ছে। ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো যথেষ্ট মজবুত। ভারতীয় সংবিধানে বাকস্বাধীনতার অধিকার স্বীকৃত আছে। স্বাধীন বিচারবিভাগ এবং শক্তিশালী সংবাদমাধ্যমও সেই গণতান্ত্রিক কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সেইসঙ্গে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, ‘জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া কোনও মেসেজের ফলে হিংসা বাড়ছে, ভারতের অখণ্ডতার ক্ষতি করছে, কোনও মহিলাকে খারাপভাবে দেখাচ্ছে বা শিশুর যৌন নির্যাতন দেখাচ্ছে এবং যখন কোনও হস্তক্ষেপমূলক বিকল্প কাজে দিচ্ছে না, শুধুমাত্র তখনই সোশ্যাল মিডিয়ার উল্লেখ্যযোগ্য মধ্যস্থকাকারীদের জানাতে হবে যে কে প্রথম মেসেজটা ছড়িয়েছে।’