রাষ্ট্রসংঘের প্রধান অ্যান্টনিও গুয়েতরেস ইতিমধ্যেই সতর্কবাণীতে বলেছেন, 'মানব সভ্যতা পারবাণবিক ধ্বংসের থেকে এক ধাপ দূরে, দূরত্ব ভুল বোঝাবুঝি ও ভুল হিসাবের।' এই বিষয়ে ইউক্রেনের বুকে রুশ হামলার প্রেক্ষাপটকেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন মধ্য এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপ জুড়ে কোন ধ্বংস নিনাদ বাজতে শুরু করেছে। এরপরই মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন জানিয়েছেন তিনি পরমাণু যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে রাশিয়ার পুতিনের মুখোমুখি হতে রাজি। অন্যদিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলছেন, পারমাণবিক যুদ্ধে কোনও পক্ষই জয়ী নয়।
রাষ্ট্রসংঘে শুরু হয়েছে 'নন প্রোলিফিকেশন অফ নিউক্লিয়ার ওয়েপেনস' এর কনফারেন্স। পারমাণবিক অস্ত্র যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেই সংক্রান্ত আলোচনায় এই কনফারেন্সে যোগ দিচ্ছেন বিশ্বের নানান প্রান্তের কূটনীতিবিদরা। এই আলোচনা ২০২০ সালেই সংগঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে কোভিডের জন্য তা পিছিয়ে যায়। আর সেই কনফারেন্সেই এসেছে জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের তরফে বার্তা। এই কনফারেন্সে রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলা, উত্তর কোরিয়ার পরিস্থিতির নিরিখে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব। হেলিকপ্টার ভেঙে পড়তেই পাক সেনা কমান্ডারের মৃত্যু! সন্দেহে বালুচ বিদ্রোহীরা
প্রসঙ্গত, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলার কয়েকদিন পরই রাশিয়া দেশের সমস্ত পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্রকে 'অ্যালার্টে' রেখে কার্যত হুমকি দিয়েছিল ইউক্রেনকে। সেই সঙ্গেই ন্যাটো ভূক্ত দেশ ও পশ্চিমী বিশ্বকে বার্তা দিয়েছিলেন পুতিন। রাশিয়ার ওর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে কার্যত ক্ষোবের সুর তুঙ্গে রাখেন তিনি। পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ন্ত্রেণ আমেরিকা ও রাশিয়া তাদের 'START ' চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে। ফলে ২০২৬ সাল পর্যন্ত স্ট্র্যাটেজিক নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড ও সাবমেরিন নির্ভর মিসাইল ও বম্বকে নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রচেষ্টা শুরু করেছে দুই দেশ।
বাইডেন জানিয়েছেন এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ফের মেয়াদ বাড়াতে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত। এদিকে, রাশিয়ার প্রশ্ন, বাইডেন যদি এই বিষয়ে কথাই বলতে চান, তাহলে ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে স্ট্র্যাটেজিক বৈঠক থেকে কেন পিছিয়ে গিয়েছিল ওয়াশিংটন?
শুধু রাশিয়া নয় বাইডেন চাইছেন পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে চিনের সঙ্গেও কথা বলতে। এই বিষয়ে মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, আমেরিকা চিরকালই চেয়েছে যাতে পারমাণবিক অস্ত্রের ঝুঁকি গোটা বিশ্ব থেকে সরানো যায়। আর সেই নিরিখেই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছে সেদেশ। আপাতত এই ইস্যুতে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলির তরফে রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে কোন বার্তা যায় সেদিকে তাকিয়ে বিশ্ব।