সেচের অভাবে সময় মতো ফসল ফলানো যাবে না। এ দিকে টিউবওয়েল সচল রাখতে ডিজেল কেনার টাকাও নেই। বুদ্ধি খাটিয়ে শেষে রান্নার গ্যাস কাজে লাগিয়ে টিউবওয়েল চালিয়ে মুশকিল আসান করলেন কৃষক সোনু তিওয়ারি।
কানপুর জেলার শিবরাজপুর মহকুমায় নদিহা বুজুর্গ গ্রামের বাসিন্দা সোনু দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়েই স্কুলে যাওয়ায় ইতি টেনেছিলেন। তা বলে তাঁর বুদ্ধিতে যে বিন্দুমাত্র শান কমেনি, তা প্রমাণ করে ছেড়েছেন সম্প্রতি।
চাষের খেতে জল দেওয়ার জন্য ডিজেলের অভাবে তাই সরকারি উজ্জ্বলা প্রকল্পে পাওয়া এলপিজি সিলিন্ডার কাজে লাগিয়ে সমস্যার সমাধান করে ফেলেছেন কানপুরের এই কৃষিজীবী। প্রথম চেষ্টাই অবশ্য সফল হয়নি। তবে লেগে থাকার ফলে শেষ পর্যন্ত এলপিজি-তে টিউবওয়েল চালিয়ে খেতে জল ঢালতে পেরেছেন সোনু।
তিনি জানিয়েছেন, ৪ কেজি এলপিজি-তে টানা ১০ ঘণ্টা টিউবওয়েল চালানো গিয়েছে। এই কাজে সাধারণত ১১ লিটার ডিজেল পোড়ে বলে দাবি সোনুর। তিনি জানিয়েছেন, চালু করার সময় এক লিটার ডিজেল দরকার পড়লেও চালু হয়ে গেলে গ্যাসেই চলতে থাকে টিউবওয়েল। ঘণ্টায় মাত্র ১৭.৬০ টাকা খরচে এঅই সুবিধা পেয়ে উচ্ছ্বসিত এই কৃষক।
সোনুর এই আবিষ্কার নজর কেড়েছে স্থানীয় কৃষিজীবীদের। আর তাতেই আশঙ্কার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কৃষক। তিনি শুনেছেন, এই ভাবে সরকারি ভরতুকিতে পাওয়া এলপিজি ব্যবহার আইত দণ্ডনীয় অপরাধ। নিতান্ত দায়ে পড়েই এই উদ্যোগ নিয়েছেন জানিয়ে সোনু বলেন, স্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর থেকে চাষের জন্য টাকা ধার নিয়েছেন। এ দিকে জলের অভাবে ফসল না ফললে কী ভাবে ঋণ শোধ করবেন ভেবেই শেষে এই উপায় ঠাহর করতে বাধ্য হন। তবে ভবিষ্যতে এমন কাজ করবেন না বলেও তিনি কথা দিয়েছেন।
এ সবে অবশ্য কান দিচ্ছেন না স্থানীয় বর্ধিষ্ণু কৃষিজীবী তথা গ্রামপ্রধান পীযূষ মিশ্র। তাঁর কথায়, ‘সোনু যা করেছে, তা যুগান্তকারী আবিষ্কার। ও বিপদে পড়লে আমরা সবাই সাহায্য করব।’