ভাগ্যে থাকলে আপনাকে ঠেকায় কে? হতদরিদ্র অবস্থা থেকেও আপনি হয়ে যেতে পারেন কোটিপতি। খানিকটা এমন ঘটনাই ঘটলো চিলির এক্সকুয়েল হিনোজোসার ক্ষেত্রে। দীর্ঘদিন ধরে তার বাড়িতেই আবর্জনার মধ্যে গচ্ছিত ছিল বহুমূল্য সম্পত্তি। এই ব্যক্তি সম্প্রতি ঘর পরিষ্কার করার সময় বহু অপ্রয়োজনীয় জিনিস ঘর থেকে বিদায় করছিলেন, এমন সময় তার হাতে এসে পড়ে একটি ছেঁড়া কাগজ যা খুঁটিয়ে দেখার পরেই স্তম্ভিত হয়ে যান এক্সকুয়েল। তিনি বুঝতে পারেন এটি কোনও সাধারণ আবর্জনা নয়, তার বাবার দীর্ঘদিন আগে হারিয়ে যাওয়া ব্যাঙ্ক পাসবুক ছিল এটি। বহু পুরনো দিনের ব্যাঙ্ক পাসবুক হওয়ায় ওই ব্যক্তি এই সম্পর্কে অবগত ছিল না। এই ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কথা কেবল তার বাবাই জানতেন এবং তার বাবা এক দশক আগে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে আর কেউই কিছু জানতে পারেনি।
১৯৬০ সত্তরের দশকে এক্সকুয়েলের বাবা ভবিষ্যতে বাড়ি কেনার পরিকল্পনা করে প্রায় ১.৪০ লক্ষ চিলিয়ান পেসো সঞ্চয় করেছিলেন। আজকের সময় বৈদেশিক মুদ্রায় এর মূল্য অনেকটা কম হলেও সেই সময় নিরিখে এই অর্থের মূল্য চিলির বাজারে যথেষ্টই বেশি ছিল। এই ব্যাঙ্ক বইটি পাওয়ার পর ওই ব্যক্তি একদিকে যেমন আনন্দিত হন, তার পাশাপাশি আশঙ্কিতও হয়ে পড়েন। কারণ দীর্ঘদিন আগেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু একটি আশার দিকও ছিল, কারণ ওই পাস বইতে লেখা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাক্য। এই ব্যাঙ্কটি 'গর্ভমেন্ট গ্যারান্টেড' লেখা থাকায় আশা জাগে এক্সকুয়েলের মনে। সাধারণত কোনও গর্ভমেন্ট গ্যারান্টেড ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়ে গেলেও সরকার ঋণ পরিশোধ করতে পদক্ষেপ নেয়।
তবে গ্যারান্টি থাকা সত্ত্বেও বর্তমান সরকার প্রাপ্য অর্থ ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করে। এরপর এক্সকুয়েল আইনি পথে বিষয়টি মোকাবিলা করার চেষ্টা করেন। আদালতে তিনি আবেগ এবং যুক্তির সংমিশ্রণে বক্তব্য পেশ করেন। তার বাবার দীর্ঘদিনের কস্টার্জিত সঞ্চয়ের ভাগিদার হিসেবে নিজেকে দাবি করে ওই অর্থ ফেরত চান এক্সকুয়েল। কারণ, ওই ব্যাঙ্কটি সরকারের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। অবশেষে আদালতের লড়াইতে জয়ী হোন এক্সকুয়েল। আদালত রায় অনুসারে, সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়, ১.২ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১০ কোটি টাকা ফিরিয়ে দিতে বলে এক্সকুয়েলের কাছে। অভিনব এই সংবাদে স্বভাবতই বিস্মিত চিলির সাধারণ মানুষ।