গত শনিবার থেকে এক যুবক তাঁর শ্বশুরবাড়ির বাইরে বসে ধরনায় বসে আছেন। তাঁর কথায়, বিয়ের এক বছর হতে না হতেই তাঁকে ছেড়ে বিনা কারণে বাপেরবাড়ি ফিরে গিয়েছেন স্ত্রী। করেছেন ‘মিথ্যা’ মামলা। এর কারণ ব্যাখ্যা না করা পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ির দরজা থেকে নড়বেন না, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ওই যুবক। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের জগদীশপুরার সুলহাকুলনগরের।
আজমেরের (রাজস্থান) বৈশালীনগরের বাসিন্দা অবিনাশ বর্মার বিয়ে হয়েছিল ২০১৫ সালের মে মাসে। তিনি পেশায় অ্যাকাউন্টেন্ট ছিলেন। অবিনাশ জানান, তাঁদের বিবাহিত জীবন বেশ শান্তিপূর্ণই ছিল। ২০১৬ সালের মে মাসে বিবাহবার্ষিকীর আয়োজনও করছিলেন তিনি।
কিন্তু মে মাসে, হঠাত্ই একদিন তাঁর স্ত্রী বিউটি পার্লারের নাম করে বের হন। তারপর আর বাড়িতে ফেরেননি। এরপর উদ্ভ্রান্তের মতো স্ত্রীকে খুঁজতে শুরু করেন বলে জানিয়েছেন অবিনাশ। পরে জানতে পারেন নিজের বাপের বাড়িতেই গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী।
সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ছোটেন বলে জানিয়েছেন অবিনাশ। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে বিশেষ কথাই বলেননি তাঁর স্ত্রী। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জানান, আপাতত ৩-৪ দিন থেকেই তাঁর স্ত্রী ফিরে আসবেন।
শ্বশুরবাড়ির সকলের কথায় কিছুটা আশ্বস্ত হন অবিনাশ। বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই তাঁর বাড়িতে পুলিশকর্মীরা হাজির হন। তিনি জানতে পারেন যে স্ত্রী মহিলা কমিশনে অভিযোগ করেছেন। মহিলা কমিশন তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে।
অবিনাশের দাবি, তিনি এবং তাঁর পরিবার অভিযোগ শুনে আকাশ থেকে পড়েন। তিনিও পাল্টা স্ত্রী'র বিরুদ্ধে আজমের আদালতে মামলা করেন। এদিকে এরই মধ্যে আগ্রায় তাঁর স্ত্রী বিয়েতে পণ নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সঙ্গে খরপোষেরও দাবি করেন আদালতে।
কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে এই বিবাদের জেরে অবিনাশের নিজের মা-বাবা-ই তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাননি। অবিনাশকে অনত্র থাকতে বলা হয়। শুধু তাই নয়, জানাজানি হয়ে যাওয়ায় চাকরিও হারাতে হয় তাঁকে। বদনাম হয়ে যাওয়ায় নতুন চাকরিও পাননি অবিনাশ। আপাতত ছোটোখাটো, সাময়িক কাজ করেই তাঁর পেট চলে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে, এখনও স্ত্রী কেন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তা জানতে পারেননি বলে দাবি অবিনাশের। শ্বশুরবাড়ির দরজার সামনে চেয়ারে বসে তিনি বললেন, 'আমি কোনও খারাপ কাজ করেছিলাম, কেন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে আমার জীবন নষ্ট করা হল, তার জবাব চাই স্ত্রী'র কাছে। যতদিন না সেই জবাব মিলছে, আমি শ্বশুরবাড়ির দরজা থেকে উঠব না।'
তিনি জানান, অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও তাঁর সঙ্গে কথাই বলেন না স্ত্রী। যতদিন না কথা বলবেন, ততদিন তিনি ধরনা থেকে উঠবেন না বলে জানিয়েছেন। যদিও অবিনাশের ধরনা দেখতে এলাকার অনেকেই আসছেন। প্রতিবেশীরা তাঁর চা-জলখাবারেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এবার শেষমেশ অবিনাশের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর কথা হয় কিনা, সেই অপেক্ষাই করছেন তাঁরা।