বাংলাদেশ স্বাধীনতা পাওয়ার পর এই প্রথমবার এতটা দাম বাড়ল পেট্রোলের। শেখ হাসিনার সরকার জ্বালানি তেলের উপর থেকে ভর্তুকি তুলে নিয়েছে। তার জেরেই পেট্রোপণ্যের দাম এক লাফে অনেকটাই বেড়েছে। প্রায় ৫১.৭ শতাংশ দাম বেড়েছে জ্বালানি তেলের। এর ফলে বাংলাদেশ জুড়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের একাধিক পথ অবরোধ করে চলছে এই বিক্ষোভ আন্দোলন। জনগণের দাবি এভাবে দাম বাড়ানো যাবে না। আগের দাম ফেরাতে হবে জ্বালানি তেলের।
বাংলাদেশে গত শুক্রবার মাঝরাত থেকে বাড়ানো হয়েছে পেট্রোপণ্যের দাম। পেট্রোলের দাম প্রায় ৪৪ টাকা এবং ডিজেলের দাম ৩৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বাদ যায়নি অকটেন, কেরোসিন। এগুলোর দামও বেড়েছে। এভাবে প্রতি লিটারে এতটা দাম বাড়ার ফলে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তরা দারুন সমস্যায় পড়েছে। একদিকে যেমন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে তেমনই জ্বালানি তেল কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন কম বেশি সকলেই। সব কিছুই যেন হঠাৎই অগ্নিমূল্য হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে এভাবে পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ার ফলে রাস্তা থেকে বাস তুলে নিয়েছে বাস সংগঠনের মালিকরা। ফলে পথে বেরিয়েও দারুন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এভাবে সব দিকে সমস্যায় পড়ায় তারা কার্যত বাধ্য হয়ে পথে নেমেছে।
বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। রাস্তায় রাস্তায় চলছে অবরোধ, বিক্ষোভ। হাসিনা সরকারের এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছে না জনগণ থেকে বিরোধীরা কেউই। ঢাকায় বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয় এতটা দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে। বিক্ষোভকারীরা সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে।
শুক্রবার দিন পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ার কথা ঘোষণা হতেই বিভিন্ন পেট্রোলপাম্পের সামনে লম্বা লাইন লেগে যায় যাতে শেষবারের মতো কম দামে পেট্রোল ভরে নিতে পারেন তাঁরা। কিন্তু কাউকেই ১০০-২০০ টাকার বেশি পেট্রোল দেওয়া হয় না। কোথাও আবার পেট্রোলপাম্প বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে একাধিক পেট্রোলপাম্পের কর্মীদের মারধর করে বিক্ষুব্ধ জনতা।
এই হঠাৎ পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে দায়ী করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে। বাংলাদেশের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতিকে দেখে কিছু বদল করা প্রয়োজন, তাই এই দাম বৃদ্ধি। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পেট্রোপণ্যের দাম পুনর্বিবেচনা করা হবে। রাশিয়াইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ তীব্র জ্বালানি সংকটে ভুগছে। নিয়মিত ওপার বাংলায় লোডশেডিং হচ্ছে জ্বালানি বাঁচানোর জন্য। খোঁজ করা হচ্ছে বিকল্প জ্বালানির। সব মিলিয়েই বাংলাদেশ এখন একটা অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।