পাঁচ বছরের সর্বনিম্নে ভারতের খাদ্যশস্যের মজুত। এই মজুত শস্য থেকেই প্রায় ৮০ কোটি মানুষকে ভর্তুকিযুক্ত শস্য সরবরাহ করে সরকার। গত পাঁচ বছরের সর্বনিম্নে নেমে এসেছে সেই মজুতের পরিমাণ। এর কারণ হিসাবে চরম আবহাওয়ার কারণে শীতকালে বপন করা গম এবং গ্রীষ্মে বপন করা ধানের কম ফলনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। উভয় ফসলের খারাপ ফসলের কারণে প্রভাব পড়ছে বাজারেও। খুচরো খাদ্যের দাম গত ২২ মাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।
তবে সরকারি মজুত নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ারও কিছু নেই। গত ১ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারের ঘরে মোট ৫১.১৪ মিলিয়ন টনের স্টক ছিল। এমনিতে সরকারকে অন্তত ৩০.৭৭ মিলিয়ন টন মজুত রাখতে হয়। তার থেকে এখনও প্রায় ৬৬% বেশি শস্য রয়েছে। ফলে সেই দিক দিয়ে সরকারের চিন্তা নেই। খাদ্য নিগমকে আপাতত এই পর্যায়ে শস্যের পরিমাণ ধরে রাখতে হবে।
চালের মজুত অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু গমের মজুতের ক্ষেত্রেই বিষয়টি কিছুটা চিন্তার। বর্তমানে গমের মজুত গত ১৪ বছরের সর্বনিম্নে নেমে এসেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরকার তার লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেকটুকুই সংগ্রহ করতে পেরেছে। ইউরোপের বাজারে এখন ভারতের গমের রপ্তানি চাহিদা তুঙ্গে। ফলে বেশি দাম পাওয়ায় কৃষকরা বেসরকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। সেগুলি চলে গিয়েছে বিদেশে। ফলে সরকারের ভাঁড়ারে তুলনামূলকভাবে গম কম।
এদিকে মার্চে তাপপ্রবাহের কারণে দেশে গমের উত্পাদনও হ্রাস পেয়েছে। গত মে মাসে রপ্তানি নিষিদ্ধ করে সরকার।
১ অক্টোবর অনুযায়ী ভারতে গমের মজুত ছিল প্রায় ২২.৭ মিলিয়ন টন। এদিকে এই সময়ে অন্তত ২০.৫ মিলিয়ন টন রিজার্ভ রাখার কথা। ফলে ন্যূনতমের ঠিক ধারেকাছেই বর্তমানে গমের মজুত।
১ অক্টোবর পর্যন্ত চালের মজুত ছিল ২০.৪৭ মিলিয়ন টন। অন্যদিকে ছাঁটাই না করা ধানের পরিমাণ ১১.৮৩ মিলিয়ন টন। তুলনাস্বরূপ, গত বছর এই মজুতের পরিমাণ যথাক্রমে ২৫.৩৩ মিলিয়ন টন এবং ১৪.০৭ মিলিয়ন টন ছিল।
গত মাসে বিদেশে চালের রফতানির উপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে। ২০% রফতানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ প্রাপ্যতা বাড়াতে খোসা ছাঁটাই করা চালের রফতানি নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র।