শিল্প সম্মেলন কার্যত এখন প্রতিটা রাজ্যই করে। তবুও প্রতিবছরই নজর থাকে ভাইব্র্যান্ট গুজরাট সামিটের ওপর কারণ এখানেই ভারতের সবচেয়ে বড় শিল্পপতিরা এসে তাঁদের ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। আর এবার, ভোটের ঠিক আগেই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে তাঁর দরাজ প্রশংসা করলেন দেশের দ্বিতীয় ধনীতম ব্যক্তি মুকেশ আম্বানি। মোদীই ভারতের সবচেয়ে সফল প্রধানমন্ত্রী, এই দাবিও করেছেন এই ধনকুবের।
এদিন মুকেশ আম্বানি বলেন,'আমি গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ার শহর থেকে আধুনিক ভারতের বিকাশের প্রবেশদ্বার গুজরাটে এসেছি। আমি একজন গর্বিত গুজরাটি... বিদেশিরা যখন নতুন ভারতের কথা ভাবেন, তখন তাঁরা নতুন গুজরাটের কথা ভাবেন। কিভাবে এই রূপান্তর ঘটেছিল? আমাদের সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার ফলেই এই বদল। এই কারণেই তিনি ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল প্রধানমন্ত্রী'।
আম্বানি বলেন, ভারতে তাঁর সংস্থার ১৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের এক-তৃতীয়াংশই হয়েছে গুজরাটে। ‘রিলায়েন্স একটি গুজরাটি সংস্থা ছিল, আছে এবং থাকবে... রিলায়েন্স গত ১০ বছরে ভারতজুড়ে বিশ্বমানের সম্পদ ও সক্ষমতা তৈরিতে ১৫০ বিলিয়ন ডলার বা ১২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছে, যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে শুধুমাত্র গুজরাটে’।
মুকেশ আম্বানি ভাইব্রেন্ট গুজরাট সামিটকে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বিনিয়োগকারীদের শীর্ষ সম্মেলন বলে অভিহিত করেছেন। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এ ধরনের আর কোনো শীর্ষ সম্মেলন চলতে পারেনি, বলে তিনি জানান। এটি প্রধানমন্ত্রী মোদীর দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারাবাহিকতার ফলেই হয়েছে, বলে মনে করেন রিলায়েন্সের মালিক। প্রসঙ্গত,গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদী এই সম্মেলনের সূচনা করেছিলেন।
আম্বানি বলেন, পৃথিবীর কোনও শক্তিই ভারতকে ৩৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়া থেকে রুখতে পারবে না। তিনি বলেন, গুজরাটের অর্থনীতি হবে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের।
নতুন প্রজন্মের জন্য বার্তা দিয়ে মুকেশ আম্বানি বলেন যে রকমারি উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা ও কোটি কোটি মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করার সুযোগ আছে নবীনদের কাছে। মোদীকে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন,'আগামী প্রজন্ম অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে যে তিনি জাতীয়তাবাদী এবং আন্তর্জাতিকতাবাদী। আপনি অমৃত কালের মধ্যে 'বিকাশিত ভারত'-এর জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছেন - ভারতকে একটি সম্পূর্ণ রূপে উন্নত জাতি হিসাবে গড়ে তুলেছেন। পৃথিবীর কোনও শক্তিই ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে ৩৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হতে বাধা দিতে পারবে না। আর আমি দেখছি, গুজরাট একাই ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হবে।'
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস সহ বিভিন্ন বিরোধী দল বারবার বলেছে যে মোদী সরকারের নীতিতে আম্বানি, আদানি সহ গুটিকতক শিল্পপতিদের শুধু লাভ হয়েছে। কিন্তু সেই সমালোচনাকে যে শিল্পপতিরা বিশেষ গায়ে মাখছেন না, সেটা কার্যত সাফ হয়ে গিয়েছে। এদিনও তার ব্যতিক্রম হল না।