অস্ত্রোপচারের পরে করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা বিপুল হারে বেড়ে গিয়েছে, জানা গিয়েছে আন্তর্জাতিক সমীক্ষায়। সম্প্রতি এশিয়া, আফ্রিকা ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের ২৩৫টি হাসপাতালের মোট ১,১২৮ জন রোগীর উপরে করা সমীক্ষায় জানা গিয়েছে এই তথ্য।
ব্রিটেনের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেল্থ রিসার্চ-এর বিশেষজ্ঞদের সাম্প্রতিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য ল্যান্সেট’ পত্রিকায়। গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে যে, করোনা আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের ৩০ দিনের মধ্যে মৃত্যুর হার দেখা গিয়েছে ২৩.৮%।
এই প্রবণতা দেখা গিয়েছে বিভিন্ন গোত্রের অস্ত্রোপচার হওয়া রোগীর ক্ষেত্রে। এর মধ্যে রয়েছে ইলেক্টিভ অস্ত্রোপচার (১৮.৯%), জরুরি ভিত্তিক অস্ত্রোপচার (২৫.৬), অ্যাপেন্ডিসেক্টমি বা হার্নিয়ার মতো ছোট অপারেশন (১৬.৩%) এবং হিপ সার্জারি বা কোলোন ক্যানসার সার্জারির মতো বড় মাপের অস্ত্রোপচারও (২৬.৯%)।
গবেষকদের দাবি, করোনা আক্রান্তের অস্ত্রোপচারের পরে ইন্টেন্সিভ কেয়ার বিভাগে ভরতি আশঙ্কাজনক রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে মৃত্যুর ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
এর মধ্যে আবার মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে অস্ত্রোপচারের পরে মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি। দেখা গিয়েছে, অস্ত্রোপচারের পরে করোনা আক্রান্ত পুরুষ রোগী মারা গিয়েছেন ২৮.৪% এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে মৃত্যু হয়েছে ১৮.২ শতাংশের। এ ছাড়া ৭০ বছর বা তার বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে মৃত্যু হয়েছে ৩৩.৭% এবং ৭০ বছরের নীচে থাকা বয়স্ক রোগী মারা গিয়েছেন ১৩.৯% ।
বয়স ছাড়া এই সমস্ত ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে পুরনো স্বাস্থ্য সমস্যা, ক্যানসারের অস্ত্রোপচার, জটিল অস্ত্রোপচার এবং জরুরি ভিত্তিক অস্ত্রোপচারের মতো উপাদান। গবেষণা দলের সদস্য অনিল ভাঙ্গুর মতে, ছোটখাটো অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মৃত্যুর আশঙ্কা সাধারণত এক শতাংশেরও কম থাকে। কিন্তু করোনা আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে তা অনেক গুণ বেড়ে যেতে দেখা গিয়েছে।
ঝুঁকি এড়াতে বিশ্বে প্রায় ২৮৪ কোটি ছোট মাপের অস্ত্রোপচার অতিমারি পর্বের মধ্যে বাতিল করেছেন চিকিৎসকরা।