৭ বছর আগে জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় পা হারিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ওই ব্যক্তিকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। ঘটনাটি মুম্বইয়ের। একটি মোটর অ্যাকসিডেন্ট ক্লেইমস ট্রাইব্যুন্যাল এই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ট্রাইব্যুনালের আরও নির্দেশ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণ না মেটালে সুদ সহ টাকা মেটাতে হবে। বিমা সংস্থা এবং ঘাতক গাড়ির চালককে এই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নর্দমা পরিষ্কারের সময় মৃত্যু হলে সাফাইকর্মীর পরিবার পাবে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ
জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের ভান্ডুপের বাসিন্দা ৫৪ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি একটি এফএমসিজি কোম্পানিতে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার। তাঁর পোস্টিং ছিল মধ্যপ্রদেশে। এক বন্ধুর সঙ্গে গাড়িতে করে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র থেকে দাতিয়া যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়ে একটি ধাবার কাছে গাড়ি থামিয়ে শৌচকর্ম করেন তিনি। তখন বিপরীত দিক থেকে একটি ট্যাঙ্কার এসে তাঁকে ধাক্কা মারে। ঘটনায় ওই ব্যক্তির ডান পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পর চিকিৎসকরা তাঁর পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন।
ট্রাইব্যুনাল বলেছে, ‘এটা ভাগ্যের বিষয় যে কোম্পানি তাঁকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করেনি।’ রায় দেওয়ার সময় ট্রাইব্যুনাল বলে, ‘দুর্ঘটনার কারণে আবেদনকারীর আয়ের ক্ষতি হয়নি এটা সত্য। তাঁর চাকরি রয়েছে। কিন্তু, এটা তাঁর সৌভাগ্য যে কোম্পানি তাঁকে ছাঁটাই করেনি। তবে এই দুর্ঘটনার কারণে তাঁর উপার্জন ক্ষমতা নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সত্য উপেক্ষা করা যাবে না। তাঁর কাজের ধরণ এবং তিনি যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তা মাথায় রাখতে হবে। আমরা অনুমান করতে পারি না যে তাঁর উপার্জন ক্ষমতা প্রভাবিত হয়নি। তাঁর পা কেটে ফেলার কারণে তিনি আর আগের মতো পরিশ্রম করতে পারছেন না।’
ট্রাইব্যুনাল ওই ব্যক্তির পরিবারকেও তাঁকে দেখভালের জন্য ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ট্রাইব্যুনাল এ প্রসঙ্গে জানায়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিকে এখন প্রতিনিয়ত কারও সাহায্য নিয়ে চলতে হচ্ছে। ঠিকমতো হাঁটতেও পারছেন না। এছাড়া চিকিৎসার জন্যও ব্যয় অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, ওই ব্যক্তি গাড়ির মালিক রাকেশ শর্মা এবং বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে এই মামলা করেছিলেন। তাতে বিমা কোম্পানিকে ওই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল বলেছে, ওই ব্যক্তি এখন ৫০ শতাংশ প্রতিবন্ধী। তাই প্রতিদিন তাঁকে লাঠির সাহায্যে এবং অন্তত একজনের সহায়তা নিতে হয়। ডান পা কেটে ফেলার কারণে তিনি হাঁটতে, গাড়ি চালাতে বা সহজে দৈনন্দিন কাজ করতে পারেন না। এছাড়াও , তাকে নিয়মিত চিকিৎসা করতে হচ্ছে।উল্লেখ্য, দুর্ঘটনাগ্রস্থ ব্যক্তি ২০১৭ সালে গাড়ির মালিক এবং বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। প্রমাণ হিসেবে পুলিশের কাগজপত্র ছিল তাঁর কাছে।