১৯৫৮ সালে গঠিত হয়েছিল দিল্লি পুরনিগম। একদশক আগে সেই পুরনিগম তিনভাগে খণ্ডিত হয়েছিল। তবে ২০২২ সালের ফের একবার জুড়ে গেল তিনটি পুরনিগম। ফের ২৫০ ওয়ার্ড বিশিষ্ট অবিভক্ত দিল্লি পুরনিগম গঠিত হল। আজ সেই পুরনিগমের নির্বাচন। আম আদমি পার্টি এবং বিজেপির কাছে অগ্নিপরীক্ষা। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দিল্লি পুরনিগমে যোগ্য ভোটারের সংখ্যা ১ কোটি ৪৫ লাখ ৫ হাজার ৩৫৮। মোট ১৩৪৯ জন প্রার্থীর ভাগ্যনির্ধারণ হবে আজ।
সাধারণত জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে পুরনিগমের নির্বাচন ততটাও তাৎপর্যপূর্ণ নয়। তবে দিল্লি পুরনিগমের নির্বাচনের বিষয়টি আলাদা। রাজধানীর রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করে পুরনিগমের ভোট। টানা দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী হয়ে এসেছে আম আদমি পার্টি। তবে এর আগে দিল্লির তিনটি পুরনিগমেই মেয়র ছিল বিজেপির। এই আবহে অবিভক্ত পুরনিগম মিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া হবে বিজেপি। প্রসঙ্গত, দিল্লিবাসীর নিত্য দিনের সমস্যা মেটানো এবং পরিষেবা প্রদানের দায়িত্বে আছে এই পুরনিগমই। এই আবহে পুরনিগমের নির্বাচনকে বিধানসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল হিসেবে দেখতে শুরু করেছে বিজেপি এবং আম আদমি পার্টি। আর এই কারণেই দুই শিবিরই কোমর কষে এই পুরনিগম নির্বাচনের প্রচারে নেমেছিল।
দিল্লি পুরনিগমের বাৎসরিক বাজেটের পরিমাণ ১৫,২০০ কোটি টাকা। পুরনিগমের মোট কর্মী সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ। আজ ১৩,৬৩৮টি বুথে ভোটগ্রহণ পর্ব চলবে। আগামী ৭ ডিসেম্বর ফলাফল প্রকাশ করা হবে দিল্লি পুর নির্বাচনের। বিগত ১৫ বছর ধরে দিল্লির পুরনিগম দখলে রয়েছে বিজেপির। এই আবহে এই পুরনিগমে নিজেদের দখলে রাখতে হেভিওয়েট মন্ত্রীদের প্রচারে নামিয়েছিল গেরুয়া শিবির। অপরদিকে আম আদমি পার্টির হয়ে দিল্লি চষে বেরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লির উন্নয়নের উদ্দেশে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দুই দলই। সাধারণত, স্থানীয় ইস্যুর ওপরই লড়াই হয় পুরনিগমের। তবে দিল্লি পুরনিগমের নির্বাচন দুই দলের জন্যই রাজনৈতিক ভাবে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। দুর্নীতির দায়ে জর্জরিত আম আদমি পার্টির কাছে এই নির্বাচন হলে ‘ঘুরে দাঁড়ানো’র লড়াই। অপরদিকে বিজেপির কাছে ‘কর্তৃত্ব বজায় রাখার’ লড়াই এই পুরনির্বাচন। এর জন্যই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার পাশাপাশি দিল্লি পুরনিগমের প্রচারে নেমেছিলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মারা। এই আবহে দিল্লিতে শেষ হাসি কে হাসবে, তা জানা যাবে ৭ ডিসেম্বর।