মুসলিমদের বসবাসের জন্য বিশ্বে ১৫০টি দেশ থাকলেও হিন্দুরা থাকতে পারেন শুধু ভারতেই। মঙ্গলবার ঘোষণা করেছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের স্বপক্ষে এ দিন প্রতিবাদীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন রূপানি। সবরমতী আশ্রমে এক জনসভায় তিনি নয়া আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য কংগ্রেসকে তুলোধনা করেন। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তিনি মহাত্মা গান্ধী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ইচ্ছা অমান্য করার অভিযোগও তোলেন।
এ দিন রূপানি দাবি করেন, ‘দেশভাগের সময় (১৯৪৭ সাল) পাকিস্তানে ২২% হিন্দু ছিলেন। ধর্মান্তকরণ, ধর্ষণ ও নিরন্তর অত্যাচারের ফলে বর্তমানে তাঁরা জনসংখ্যার মাত্র ৩% এসে দাঁড়িয়েছেন। দুর্দশাগ্রস্ত সেই হিন্দুদের আমরা সাহায্য করার চেষ্টা করছি যা কংগ্রেসের করা উচিত ছিল। আর যখন তা করছি, আপনারা তখন বাধা দিচ্ছেন।’
বাংলাদেশেও হিন্দুদের সংখ্যা ২ শতাংশতে এসে ঠেকেছে বলে অভিযোগ করেন রূপানি। তাঁর কথায়, ‘কয়েক দশক আগে আফগানিস্তানে বসবাসকারী ২ লাখ হিন্দু ও শিখদের মধ্যে আজ টিকে রয়েছেন মাত্র ৫০০ জন। মুসলিমরা বিশ্বের ১৫০ দেশে গিয়ে বসবাস করতে পারেন কিন্তু হিন্দুদের থাকার জন্য মাত্র একটি দেশই রয়েছে, আর তা হল ভারত। এই জন্য, তাঁরা ফিরে আসতে চাইলে সমস্যা কোথায়?’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পালটা দিতে এ দিন রাজ্যের ৩৩টি জেলার জনসভায় অংশগ্রহণ করেন গুজরাতের বিজেপি নেতা ও সরকারি আধিকারিকরা। আরএসএস-এর সমর্থনে জনসভাগুলি আয়োজন করে রাজ্যের ‘নাগরিক সমিতি’।
নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করায় সভামঞ্চ থেকে দলিতদের উদ্দেশেও তোপ দাগেন রূপানি। তিনি বলেন, ‘এই সমস্ত দেশ থেকে কচ্ছে বসবাসকারী ১০ হাজার শরণার্থীর মধ্যে মাহেশ্বরী ও মেঘওয়ালদের মতো দলিত সম্প্রদায় রয়েছে। এই সমস্ত দলিত শরণার্থীদের কেন নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না, তা ব্যাখ্যা করতে হবে দলিত নেতাদের। সিএএ বিরোধিতা এই নেতাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে।’
শুধু তাই নয়, এ দিন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একহাত নিয়েছেন রূপানি। তাঁর দাবি, কংগ্রেস ও কমিউনিস্টদের মতো রাজনৈতিক দল এবং মমতার মতো নেত্রী ভারতে থাকা ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁরা বিক্ষোভে ইন্ধন জোগাচ্ছেন বলেও অভিযোগ গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর।