সম্প্রতি ১২ জন প্রাক্তন মন্ত্রী সহ প্রায় ৩৫ জন শীর্ষ স্থানীয় বিআরএস নেতা যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। তেলাঙ্গনা প্রতিষ্ঠার পর কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দলে এত বড় ভাঙন আর দেখা দেয়নি। এই সবের মাঝেই জল্পনা শুরু হয়, কংগ্রেসের সঙ্গে বৃহত্তর বিরোধী জোটে থাকতে চান না কেসিআর। সেই আবহে বিজেপির সঙ্গে জোটের সমীকরণ সামনে আসে। তবে এসবের মাঝে এবার মোদীর গলায় কেসিআর তনয়া কে কবিতার প্রতি শ্লেষ। গতকাল মধ্যপ্রদেশের এক জনসভায় দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় মোদীর গলায় শোনা যায় কেসিআর এবং ডিএমকে-র প্রতি আক্রমণ।
গতকাল দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় মোদী বলেন, 'যদি করুণানিধির পরিবারের মঙ্গল চান, তাহলে ডিএমকে-কে ভোট দিন। আবার যদি কেসিআর-এর মেয়ের কল্যাণ চান, তাহলে বিআরএস-কে ভোট দিন। তবে যদি জনসাধারণের মঙ্গল চান, নিজের সন্তান ও পরিবারের মঙ্গল চান, তাহলে বিজেপিকে ভোট দিন।'
উল্লেখ্য, তেলাঙ্গনায় ধীরে ধীরে শক্তি বৃদ্ধি করেছে বিজেপি। হায়দরাবাদের নাম বদল থেকে শুরু করে রাজাকার ইস্যু নিয়ে মেরুকরণের সাহায্যে সেখানে নিজেদের পায়ের তলার জমি শক্ত করেছে বিজেপি। সেই রাজ্য থেকে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ৪ জন সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিল। এদিকে বিগত দিনে বেশ কয়েকটি উপনির্বাচনে কেসিআর-এর দলকে হারিয়ে অনেকের চোখ কপালে তোলে বিজেপি। হায়দরাবাদ পুরসভার নির্বাচনেও বিজেপি বেশ ভালো ফল করে। যদিও শেষ পর্যন্ত আসাদউদ্দিন ওয়াইসির এআইএমআইএম-এর হাত ধরে সেখানে বোর্ড গড়েছিল কেসিআর-এর অধুনা তেলাঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি। যদিও পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা পেতে এবং বিজেপিকে হারাতে দলের নাম বদলে ভারত রক্ষা সমিতি রাখা হয়। বেশ কিছু রাজ্যে ঘুরে ঘুরে কেসিআর বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
তবে এই সবের মাঝেই দিল্লির আবগারি দুর্নীতিতে নাম জড়ায় কেসিআর তনয়ার। ওদিকে তেলাঙ্গনায় নিজেদের হারানো জমি ফিরে পেতে কংগ্রেস বিআরএস-এ ভাঙন ধরানোর ছক কষছে। এই পরিস্থিতিতে 'সুর নরম' হয়েছে কেসিআর-এর। বিগত দু'বছর ধরে কেসিআর-এর দল কেন্দ্রীয় স্তরের সব বৈঠর বয়কট করে আসছিল। তবে সম্প্রতি মণিপুর ইস্যুতে অনুষ্ঠিত সর্বদল বৈঠকে যোগ দিয়েছিল বিআরএস। এদিকে এক দলীয় সভায় মোদীকে 'ভালো বন্ধু' আখ্যা দিয়েছিলেন কেসিআর। অপরদিকে কেসিআর-এর ছেলে কেটি রামা রাও দিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন। এই আবহে বিজেপি-বিআরএস জোটের জল্পনা তৈরি হতে থাকে। তবে এরই মাঝে মোদীর গলায় শোনা গেল কেসিআর তনয়ার উদ্দেশে আক্রমণ।