নাসার নিযুক্ত স্বাধীন একটি কমিটির তৈরি ইউএফও সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ পায় গতকাল। সেই রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছে, ইউএফও সংক্রান্ত ঘটনাগুলি আমাদের পৃথিবীর অন্যতম রহস্যডনক একটি বিষয়। যদিও ১৬ সদস্যের কমিটি দাবি করেন, এলিয়েন যে আছেই বা তার সঙ্গে ইউএফও-র যে যোগ রয়েছেই, এমন কোনও প্রমাণ এখনও তাঁরা পাননি। তবে এরই মধ্যে নাসা প্রধান এই নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করে দাবি করেন, এলিয়েন নিশ্চয় আছে। (আরও পড়ুন: এবার এলিয়েন নিয়ে বিস্ফোরক খোদ নাসা প্রধান!)
গতকাল অজ্ঞাত পরিচয় উড়ন্ত বস্তু বা ইউএফও সংক্রান্ত রিপোর্টটি পেশ করেন নাসা প্রধান বিল নেলসন। মেক্সিকোর কংগ্রেসে 'এলিয়েন' প্রদর্শনের পর নাসার এই রিপোর্ট নিয়ে কৌতুহল ছিল সারা বিশ্বেই। এই আবহে রিপোর্ট পেশের সময় নাসা প্রধান নিজে মন্তব্য করেন, 'আমার বিশ্বাস এলিয়েন রয়েছে'। উল্লেখ্য, বিগত দিনে বারবার অভিযোগ উঠেছে, মার্কিন সরকার নাকি এলিয়েনের অস্তিত্ব সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছে। এই আবহে নাসা প্রধানের মন্তব্য নিয়ে জোর চর্চা চলছে। উল্লেখ্য, ইউএফও নিয়ে গবেষণায় নাসা কীভাবে এগোতে পারে, তার জন্য একটি স্বতন্ত্র রিপোর্ট তৈরি করা হয়। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয় অজ্ঞাত পরিচয় উড়ন্ত বস্তু সংক্রান্ত ৩৩ পাতার সেই রিপোর্ট। নাসার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউএফও নিয়ে নতুন বৈজ্ঞানিক কৌশলে গবেষণা চালাতে হবে। এ জন্য অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। রিপোর্ট প্রকাশের সময় সংবাদ সম্মেলনে নাসা প্রধান বিল নেলসন বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এলিয়েন রয়েছে।’ (আরও পড়ুন: পিছনে নাসা, স্পেস এক্স! চন্দ্রযান ৩-এর হাত ধরে নয়া রেকর্ড ইসরোর, সামনে এল তথ্য)
এদিকে ইউএফও প্রসঙ্গে নাসা প্রধান বলেন, 'মার্কিন আকাশসীমার জন্য অত্যন্ত খতরনাক হতে পারে এই ইউএফও।' যদিও বিল নেলসন বলেন, 'ইউএফও-র সঙ্গে এলিয়েনের যোগ আছে কি না, সে বিষয়ে নাসা কোনও প্রমাণ পায়নি। তবে আমরা বাসযোগ্য গ্রহের সন্ধান করে চলেছি মহাকাশে।' এদিকে ইউএফও গবেষণার জন্য একজন নতুন ডিরেক্টর নিয়োগ করা হবে বলে জানান নাসা প্রধান। জানা গিয়েছে গতকাল যে রিপোর্ট প্রকশ করা হয়, তার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা আনক্লাসিফায়েড নথি ঘেঁটে। এই আবহে নাসার রিপোর্টে দাবি করা হয়, কোনও উচ্চ মানের ভিডিয়ো বা ছবি তাদের কাছে ছিল না। এই আবহে এই ধরনের ইউএফও দর্শনের ঘটনাগুলিকে 'আপাতত বৈজ্ঞানিক ভাবে বিশ্লেষণ করা যাবে না' বলে জানায় নাসা।
প্রসঙ্গত, নাসার এই প্রতিবেদন এমন এক সময় প্রকাশ্যে এল, যখন গোটা বিশ্বে মেক্সিকোর 'এলিয়েন' নিয়ে জোর চর্চা চলছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মেক্সিকো কংগ্রেসে দু'টি মমি প্রদর্শিত হয়েছিল। দাবি করা হয়েছে, ওই দু'টি মরদেহ পৃথিবীর কোনও প্রাণীর নয়। পিছনে একটি জোরালো যুক্তিও খাড়া করেছেন ইউএফও বিশেষজ্ঞ জেইমি মোসান। জানানো হয়, ওই দুই কঙ্কালের ৩০ শতাংশ ডিএনএ একেবারেই অপরিচিত। অর্থাৎ পৃথিবীতে এত শতাব্দী ধরে যত ধরনের প্রাণী ছিল তাদের কারও সঙ্গেই মিল নেই। এর ভিত্তিতেই মনে করা হচ্ছে, প্রাণী দুটি ভিন গ্রহের। মেক্সিকোর ঘটনায় ইউএফও বিশেষজ্ঞ জেইমি মোসান দাবি করেন, কোনওভাবে পৃথিবীতে পৌঁছানোর পর মারা গিয়েছিল এই দুই প্রাণী। প্রায় এক হাজার বছর আগে এই ঘটনা ঘটে বলে দাবি করা হচ্ছে। ডিএনএ সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে ন্যাশনাল অটোনমাস ইউনিভার্সিটি অফ মেক্সিকোতে। যদিও সেই সংস্থারই গবেষক জুলিয়েটা ফিয়েরো বুধবার এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে বিস্তারিত জানান। তাঁর কথায়, ইউএফও বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক জেইমি মোসানের দাবি অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের কাছে ভিত্তিহীন লেগেছে।